সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি :   ৮ বছরের বালককে মাথায় বাড়ি মেরে, ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠল হুগলির ( Hoogly News )  উত্তরপাড়ার কানাইপুরে। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র স্নেহাংশু শর্মার রক্তাক্ত দেহ। উত্তরপাড়া থানা এলাকার কানাইপুর আদর্শনগর ইংলিশ রোড এলাকার ঘটনা।


স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই পড়াশোনা করছিল চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র স্নেহাংশু শর্মা। তার বাবা পঙ্কজ শর্মা কলকাতার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। মা গুড্ডি শর্মাও কর্মরতা। তিনিও  তিনি কাজ করেন স্থানীয় এক প্রসাধনী বিপণিতে। বাচ্চটি সন্ধেয় সম্ভবত একাই ছিল বাড়িতে। সেই সময় বাড়িতে টিভিও চলছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।


পুলিশ সূত্রে খবর, পরে বাচ্চাটির খুড়তুতো বোন  তাদের বাড়িতে ঢুকে দেখে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। সে দেখে, ছোট ভাই  রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চিৎকার করে ওঠে সে। সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের বাড়িতে খবর দেয় সে। প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতিতে স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরা যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন রক্তে ভাসছিল গোটা ঘর। কোথাও আবার চাপ চাপ রক্তের দাগ।  যছেলেটির গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। মাথায় ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, সেটুকু স্পষ্ট। মৃত শিশুটির দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।


পরিবারের দাবি, সপ্তাহখানেক আগে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের সঙ্গে স্নেহাংশুর ঝগড়া-মারপিট হয়। খুনের পিছনে সেই কারণ থাকতে পারে বলে পরিবারের অনুমান। খুনের কারণ ঘিরে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। পুলিশ ঘটনার শিকড়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। শনিবার ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফরেন্সিক দল। 


কয়েকদিন ছাড়া ছাড়াই খবরে উঠে আসছে শিশুমৃত্যুর এমনসব ভয়ঙ্কর ঘটনা। খুনের কারণ হিসেবে যা উঠে আসছে, তা আরও ভয়াবহ। শিরদাড়ায় শীতল স্রোত বইয়ে দেওয়ার মতো। প্রতিটি ঘটনাই তদন্তের আওতায় ও প্রমাণ সাপেক্ষ। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান থেকেও যে ছবিগুলি পাওয়া যাচ্ছে, তা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, শিশুমন কীভাবে এমন ভুল পথে চালিত হচ্ছে।


কিছুদিন আগেই আবাসিক স্কুলের এক ছাত্রকে খুনের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় পুরুলিয়ায়। এক প্রথম শ্রেণির ছাত্রকে খুনের ঘটনায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে আটক করা হয়। গত ৩০ জানুয়ারি ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়ার মানবাজার থানার একটি আবাসিক স্কুলে। মানবাজার থানার পুলিশ অভিযুক্ত ছাত্রকে আটক করে। সেই খুনের ক্ষেত্রেও ভয়ঙ্কর এক কারণ সামনে আসে। জানা যায়, অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া স্বীকার করে, তাদের মনে হয়েছিল যে ছেলেটি মারা গেলে হয়তো ছুটি পাওয়া যাবে। 


ছুটি পাওয়ার জন্য খুন? ঝগড়া হয়েছে বলে খুন ? এই সম্ভাব্য কারণগুলি সত্যি কি না জানা নেই, তবে এর সিকিভাগও যদি সত্যি হয়, তাহলে তা ভয়ানক।