সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: গার্ডেনরিচের বেআইনি বহুতল ভেঙে প্রাণ গিয়েছে ৯ জনের। তার মধ্যে বৈদ্যবাটিতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ি। জখম দুই শ্রমিক। তাঁরা, ওই বাড়ির ভাঙারই কাজ করছিলেন বলে খবর। গার্ডেনরিচের ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই এখন এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য এলাকায়। 


বিশদ...
বৈদ্যবাটি চৌমাথায় জিটি রোডের উপর একটি পুরনো বাড়ি ভাঙার কাজ গত কয়েকদিন ধরেই চলছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে সেই কাজ চলাকালীনই  জিটি রোডের ওপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িটির একাংশ। কর্মরত ২ জন শ্রমিক জখম হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে পার পাওয়া গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ঠিকাদার-সহ তিনজন জনকে আটক করা হয় বলে খবর। বাড়ি ভাঙার সময় কোনও রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। পথচারীদের যাতে কোনও বিপদ না হয়, সে জন্য রাস্তার দিকে নেট বা চট দিয়ে ঢেকেও দেওয়া হয়নি বলে জানান তাঁরা। তাছাড়া, বাড়িটি অনুমতি নিয়ে ভাঙা  হচ্ছিল কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গার্ডেনরিচের বহুতল ভাঙার ঘটনায় যখন কলকাতা-সহ গোটা বঙ্গের রাজনীতিই সরগরম, তখন বৈদ্যবাটিতে এমন একটি ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই নজর কেড়েছে। 


গার্ডেনরিচে মৃত্যুমিছিল...
রবিবার মাঝরাতে গার্ডেনরিচের বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের প্রাণহানির কথা জানা গিয়েছে। সোমবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলার পর আলোর অভাবে তা বন্ধ রাখতে হয়। এদিন সকাল থেকে তা ফের শুরু হয়েছিল। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চলে প্রাণের খোঁজ। স্নিফার ডগ এনে উদ্ধারকাজ শুরু করে এনডিআরএফ। পুকুর বুজিয়ে বহুতল, ৪ ফুট রাস্তায় ৫ তলা বাড়ি তৈরির অভিযোগ প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। বেআইনি নির্মাণ, মানলেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে মেয়র। কিন্তু এত মৃত্যুর দায় কার? ২০২২-এর ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু, সব ফ্ল্যাট বিক্রি, তাও কিছু জানত না পুরসভা? অ্যাসিস্ট্যান্ট ও সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করেই দায় সারবে তারা? মেয়র ফিরহাদ হাকিম এদিনও বলেন, 'কাউন্সিলর নন, বেআইনি নির্মাণ দেখার দায়িত্ব নির্মাণ বিভাগের আধিকারিকদের।  তাঁরা এই কাজের জন্য বেতন পান। তাঁদের ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে। আগে একাধিক বার সতর্ক করেছি। বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে বলেছি বার বার। রাতারাতি কোনও বিল্ডিং দাঁড়ায় না। ভিত তোলার সময় থেকেই সতর্ক হতে বলি। আমি যবে মেয়র হই, তখন থেকে ৮০০-র বেশি এমন বাড়ি ভাঙা হয়েছে। গার্ডেন রিচেই ভাঙা হয়েছে ২৫টির বেশি বাড়ি।' যদিও ভিন্নসুর শোনা গিয়েছে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের গলায়। তাঁর মতে, 'যে চেয়ারে বসে, নিয়ন্ত্রণের দায় তার। আমার ওয়ার্ডে হলে দায় এড়াতে পারতাম না।'


আরও পড়ুন:ওলাবিবি তলায় প্রার্থনা, পোলবায় প্রচারে বেরিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে রান্নায় হাত লাগালেন লকেট