সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, মগরা (হুগলি): ভোররাতে ডাকাতি, তাও আবার বিএসএফ কর্মীর বাড়িতে। বাধা দিতে গেলে বাড়ির লোকজনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, মাথা ফাটিয়ে নগদ ও গয়না লুঠ করা হয়েছে। যদিও সময় মতো পৌঁছে যায় পুলিশ। তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মগরার ত্রিবেনী পালপাড়ায়।


মগরার ত্রিবেনীর পালপাড়ায় প্রতাপ সিংহের বাড়িতে গতকাল রাত দুটো নাগাদ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় দুষ্কৃতী দল। প্রতাপ বিএসএফে কর্মরত, আপাতত রাজস্থানে পোস্টিং তাঁর। ছুটিতে বাড়িতে রয়েছেন এই সময়। প্রতাপ জানান, সবাই তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বাড়িতে। সেই সময় রান্নাঘরের জানলা ভেঙে ঘরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। দোতলায় তাঁর বাবা হরিনাথ সিংহ নাতি প্রতীককে নিয়ে শুয়েছিলেন। ঘরে ঢুকে বাবাকে মারধর করে লুঠপাট চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। দাদুকে মারতে দেখে দশ বছরের প্রতীক দুষ্কৃতীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপর তাকেও মারধর করে দুষ্কৃতীরা। 


শুধু মারধরই নয়, তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েও ভয় দেখায়। নাতিকে মারছে দেখে দাদু তাদের বাধা দিলে লোহার রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় হরিনাথ সিংহের। এর মধ্যে নীচের ঘরের লোকজন উঠে আসেন ওপরে। বাড়িতে ডাকাত ঢুকেছে বুঝতে পেরে এক পরিচিতকে ফোন করে পুলিশকে খবর দিতে বলেন  প্রতাপ। কিছুক্ষণের মধ্যে মগরা থানার পুলিশ হাজির হয়ে যায়। 


তিনজনকে বাড়ি থেকেই ধরে ফেলে পুলিশ। দুষ্কৃতী দলে পাঁচ ছয় জন ছিল। বাকিরা পুলিশ দেখে চম্পট দেয়। নিয়ে যায় নগদ আশি হাজার টাকা এবং পনেরো লক্ষ টাকার গয়না। মেয়ের বিয়ে ১ ডিসেম্বর, তার জন্য কেনাকাটা চলছিল সিংহ বাড়িতে। অনেক টাকা পাওয়া যাবে ভেবেই হয়তো হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ ধৃতদের জেরা করে বাকি সঙ্গীদের খোঁজ চালাচ্ছে। এলাকাবাসী আজ সকালবেলা আরও এক ডাকাতকে ধরে তাকে গণপিটুনি দেয়। তার পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন: West Medinipur : জ্বালানির তীব্র 'জ্বালা', মবিলের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে চলছে বাস !


হরিনাথ বলেন, 'আমি নাতিকে নিয়ে শুয়েছিলাম। তখন ডাকাতরা ঢুকে আমাকে চুপচাপ শুয়ে থাকতে বলে, নয়তো প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও দেয়। আমাকে ওরকম করছে দেখে নাতি তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ও ছোট, বোঝে না। দুষ্কৃতীরা যখন নাতিকে মারতে লাগল আমি ওদের বাধা দিলাম। তখনই রড দিয়ে মারল আমার মাথায়। ছোট মেয়ের বিয়ের কেনাকাটা চলছে। তার গয়না ছিল। বড় মেয়ে এসেছে তার কাছে নগদ টাকা ও গয়না ছিল। সব নিয়ে গেছে। উপর নীচে সব ঘরে লুঠপাট চালাতে থাকে। পুলিশকে ধন্যবাদ দেব, সঠিক সময়ে এসে যাওয়ার জন্য। এখন লুঠের জিনিস ফেরত পেলেই ভাল।


কিন্তু বাড়িতে যে সামনেই বিয়ে রয়েছে বা তার কেনাকাটা চলছে এত খবর ডাকাতদল পেল কোথা থেকে? ডাকাতের দাবি, বাড়ির পরিচারিকাই তাদের এই সব তথ্য দিয়েছিল।