সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, পাণ্ডুয়া : পঞ্চায়েত কর্মীদের (Panchayat Workers) সঙ্গে খারাপ আচরণ ও তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ! মিটিংয়ের জন্য হল না পাওয়ায় তিনি এই কাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে পান্ডুয়া (Pandua) BDO-র ঘরের সামনে ধর্না অবস্থানে বসেন ব্লকের সব পঞ্চায়েতের কর্মীরা। তার জেরে বাতিল হয়ে যায় দুয়ারে সরকার শিবির।
কী ঘটনা ?
গত ১৪ তারিখে হুগলির পাণ্ডুয়ার হরালদাসপুর পঞ্চায়েতে দলের লোকজন নিয়ে গিয়েছিলেন পাণ্ডুয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ। দলের মিটিং করবেন বলে পঞ্চায়েতের মিটিং হল খুলে দিতে বলেন। কিন্তু, পঞ্চায়েতের কাজের সময় দলের মিটিং করতে অনুমতি দেননি কর্মীরা।
অভিযোগ, এরপরই এক নির্মাণ সহায়ককে গালাগালি দেন তৃণমূল নেতা। অন্য কর্মীদেরও অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করেন। মারধর করার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনার ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র।
আজ পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের তালবোনা রাধারানি হাইস্কুলে দুয়ারে সরকার হওয়ার কথা ছিল।সেখানে সকাল থেকে পরিষেবা নিতে হাজির হন গ্রামের মানুষ। কিন্তু, পঞ্চায়েত কর্মীরা বিডিও অফিসে ধর্না আন্দোলন করায় শিবিরে কেউ উপস্থিত হননি। তাই বাতিল হয়ে যায় দুয়ারে সরকার শিবির। বিডিও'র ঘরের সামনে বসে পোস্টার হাতে অবস্থান শুরু করেন এন এস সচিব-সহ বহু পঞ্চায়েত কর্মী। নিরাপত্তায়হীনতায় ভুগছেন তাঁরা, এমনই দাবি তাঁদের।
হরালদাসপুর পঞ্চায়েতের কর্মী প্রসেনজিৎ ব্যানার্জি বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় দলীয় মিটিংয়ের জন্য মিটিং হলের চাবি চান সঞ্জয় ঘোষ। আমরা বলেছিলাম অফিস চলাকালীন দলীয় কাজ করা যাবে না। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি দরকার। সেই কথা শুনে তিনি গালাগালি ও হুমকি দেন।' পঞ্চায়েত কর্মীদের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এই মর্মে পাণ্ডুয়া বিডিওকে অভিযোগ জানিয়েছেন কর্মীরা।
যদিও পাণ্ডুয়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জয় ঘোষের দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন। সঞ্জয় বলেন, "আমার বদভ্যেস হল, কথা বলার সময় গলার আওয়াজটা বেশি হয়ে যায়। আর হাতটা একটু নাড়ি। তবে, আমি কাউকে খারাপ কথা বলেছি প্রমাণ করতে পারলে যা শাস্তি দেবে মেনে নেব। আসলে পঞ্চায়েতের কিছু কর্মী আছেন যাঁরা কাজের হিসাব দেন না। নতুন অঙ্গনওয়াড়ির ঘর হয়েছে সেটায় ফাটল ধরেছে, রাস্তা ঠিক মতো হয়নি। অথচ বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন। একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রধানের ডাকে পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম। সেখানে গ্রামবাসী আমাকে অভিযোগ করেন।"
এনিয়ে সুর চড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। হুগলির বিজেপির সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, "যাঁরা মানুষের কাজ করেন সেই সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তা নেই, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কী থাকবে। একজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।"