মোহন দাস ও সোমনাথ মিত্র, হুগলি: হুগলির খানাকুলে তৃণমূল প্রধানকে অপহরণের (Kidnapping) অভিযোগ ওঠার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘিরে নাটক। অপহরণের নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধান। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভিডিয়ো বার্তায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলতেও বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। মন্তব্যে নারাজ বিজেপি (BJP)। 


 পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হুগলির খানাকুলের অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। পঞ্চায়েত অফিস লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক মোটরবাইক।এরপর দিনেদুপুরে তৃণমূল প্রধানকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও ৮ ঘণ্টার মধ্য়ে নাটকীয় ‘প্রত্যাবর্তন’ ঘটে প্রধানের। অপহরণের অভিযোগ ওঠার পর, মঙ্গলবার এক ভাইরাল ভিডিয়ো বার্তায় নিজেকে বিজেপির প্রধান বলে দাবি করেন দেবাশিস সিংহ। 


খানাকুল অরুন্দা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দেবাশিস সিংহ বলেন, আমি বিজেপির প্রধান। শোনা যাচ্ছে আমি খুন হয়েছি। কিন্তু বেঁচে আছি। গুজবে কান দেবেন না। উন্নয়নে ঘাটতি হলে আমাকে বলবেন। মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যে সেই প্রধানের গলাতেই শোনা যায় উল্টো সুর। তাঁর অভিযোগ,পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠনে তৃণমূলের পাল্লা ভারী থাকায়, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। খানাকুল অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল নেতা ও প্রধান দেবাশিস সিংহ বলেন, বন্দুক ঠেকিয়ে বলেছিল,না হলে আমার প্রাণটাই চলে যেত।বিজেপির কিছু দুষ্কৃতী কিডন্যাপ করেছে।ভাড়া গাড়ি ছিল।ভাল মতন মারধর হয়েছে।চোখটা প্রায় তুলেই নিত। 


তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান হন দেবাশিস।পদ পাওয়ার দু’দিন পরেই ফেরেন তৃণমূলে। দলবদলের পুরনো রেকর্ড থাকায়, প্রধানকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি।  বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। যাদের পলিটিক্যাল ভিশন ক্লিয়ার না থাকে।ওখানকার মানুষ বিজেপিকেই চেয়েছে।লোকসভা বিধানসভা পঞ্চায়েত নির্বাচনেও।


আরও পড়ুন, লোকসভা থেকে অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন প্রত্যাহার


তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি  রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ভিডিয়ো ভাইরাল করা হয়। ভিডিয়ো কার মোবাইল থেকে ভাইরাল হয়েছে তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।অন্যদিকে, খানাকুলে পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে অশান্তির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার ও ৩০ জনের বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া, প্রধানের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁকে পুলিশি নিরাপত্তাও দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।