বলাগড়: দলে প্রভাবশালী দম্পতির বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরেই বলাগড়ে তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর (TMC MLA Manoranjan Byapari) অফিসে ভাঙচুর? প্রাথমিক ভাবে তেমনই জল্পনা বৃহস্পতিবার। বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে হামলা ও তাঁর স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক ও হুগলি জেলা পরিষদের সদস্যা রুনা খাতুনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ফের ফেসবুক পোস্টে দলীয় নেত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। লিখেছেন, 'ভাঙচুরের পর এবার আমার পাল্টা দেওয়ার সময়। বলাগড়ে ফিরছি। এবার খেলা জমে যাবে'।


যা জানা গেল...
গত কাল জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা, বিধায়ক ঘনিষ্ঠ চম্পা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ। আরও দাবি, তৃণমূল সদস্যার স্বামীকেও মারধর করা হয়। তৃণমূল সদস্যার দাবি, রুনা খাতুনের লোকজনই হামলা চালিয়েছিল। এই নিয়ে বলাগড় থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। গোটা পর্বের পর ফের দলের হাতে খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বলাগড়ের বিধায়ক। তাঁর আরও দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে পাঠিয়েছেন। মনোরঞ্জনের স্পষ্ট অভিযোগ, রুনা খাতুন ও তাঁর স্বামী সব রকম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি যে বিষয়টি দলকে জানিয়েছেন এবং দল যে তাঁর সঙ্গে রয়েছে, সে কথাও দাবি করেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক।   
'আমার সঙ্গে যাঁরা থাকেন, আমাকে যাঁরা সমর্থন করেন, তাঁরা প্রত্যেকে ওর আক্রমণের বস্তু। চম্পাকে আক্রমণ করেছে, ওঁর স্বামীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে', বলছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। দলকে যে তিনি ফোনে সবটাই জানিয়েছেন, সেটাও বলেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলাগড়ে ফিরতে প্রস্তুত। তবে দলের নেতৃস্থানীয়ের তরফে তাঁকে আপাতত কিছুদিন সেখানে ফিরতে বারণ করা হয়েছে বলে খবর। কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই রুনা খাতুন পাল্টা পুলিশের দ্বারস্থ হলেন। অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নামে কুরুচিকর পোস্ট করেন মনোরঞ্জন। তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্য়ে সেই পোস্ট ডিলিট করে নিয়ে ক্ষমাও চান। হালেই দলে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক ঘিরে অস্বস্তির চোরাস্রোত তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূলে। এই নতুন বিতর্ক সেই অস্বস্তি বাড়াবে না তো?


আব্দুল করিম চৌধুরীর মন্তব্যে বিতর্ক...
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে আবার নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন আব্দুল করিম চৌধুরী। বলেন, "কুণাল ঘোষ অনেক কথা বললেন, শুনেছি আমরা। মমতাদির উচিত ছিল ওঁকে তৎক্ষণাৎ সরিয়ে দেওয়া। প্রবীণদের ছাড়া বাংলা কেন, কোনও রাজ্য, এমনকি দেশই চলবে না। বাঁদরের হাতে নারকেল দেওয়া আর কী..যে সেনাপতি হয়েছে না! আগেই বলেছিলাম মমতাদিকে যে, বাচ্চা ছেলে, বালক। সঙ্গে রাখুন। কিন্তু পুরো ক্ষমতা দেবেন না। বাচ্চা ছেলে, শিশু।"আব্দুল করিম যদিও সরাসরি নাম উল্লেখ করেননি। তবে 'সেনাপতি' বলে তিনি অভিষেককেই নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শাসকদলের এই টানাপড়েনের মধ্যেই বলাগড়ের ঘটনা।


 


আরও পড়ুন:সিঙ্গুরের জমি ফেরত নিয়ে রাজ্যের অবস্থান কী? জানতে চাইল হাইকোর্ট