উজ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যজুড়ে যখন নারী স্বাধীনতার দাবিতে প্রতিবাদ চলছে তখন আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে তাণ্ডব চালাল একদল যুবক। ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জেরে নিমিষের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাসপাতাল চত্বর। প্রচুর পুলিশ কর্মী এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকলেও হাসপাতালে ভেতরে ঢুকে একদল দুষ্কৃতী যে তাণ্ডব চালাল সেই ঘটনাকে আটকাতে পারেননি তাঁরা। এমনকী হাসপাতালের ভেতরে বিক্ষোভরত জুনিয়র চিকিৎসকরা যে মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন করছিলেন তাও ভেঙে দেওয়া হয়। ভেতরে থাকা চিকিৎসকদের মারধর করা হয়।
রাত দখলের ডাক দিয়ে যে নারী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার একটি অংশের আরজি করের সামনে রাত সাড়ে ১১ টা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করা কথা ছিল। সেই আন্দোলনে যখন বিচার দাবিতে মহিলারা গলা মেলাচ্ছেন। সেই সুযোগে একদল যুবক পরিকল্পিতভাবে আচমকা হামলা চালাল আরজি কর হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে। জরুরি বিভাগের সামনে তুমুল হট্টগোল করে ভেতরে থাকা চিকিৎসার সরঞ্জাম ভাঙা হল। উলটে দেওয়া হল হাসপাতালের সামনে থাকা পুলিশের ব্যারিকেড। সেই সময়ই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে একদল যুবক। তারপর ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় তারা। রীতিমতো গুণ্ডামি চলে হাসপাতালের ভেতরে। ৩০ থেকে ৪০ জনের যুবকের একটি দল এই ভাঙচুর চালায় বলে জানা গেছে। সেই সময় পুলিশ আগে লুকোবে না RAF তা নিয়ে রীতিমতো নাটক দেখা যায়। দুষ্কৃতীরা চারতলা পর্যন্ত উঠে গিয়ে যে সেমিনার হল সিবিআই সিল করে দিয়ে গেছে তার দরজা ভাঙে বলে সূত্রের খবর।
বাইরে থাকা ব্যারিকেড ভাঙার পাশাপাশি উল্টে দেওয়া হল পুলিশের গাড়িও। এবিপি আনন্দের গাড়ি এবং ক্যামেরাও ভেঙে দেয় ওই যুবকরা। সেই সঙ্গে তারা চড়াও হয় খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপরেও। পুলিশের সামনেই তারা গুণ্ডামি চালায়। যার জেরে কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় ওই যুবকদের। পরে প্রাণভয়ে প্রচুর পুলিশ কর্মীকে দৌড়তেও দেখা যায়। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে জরুরি বিভাগের সামনে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। কারা করল এই গণ্ডগোল তার কোনও উত্তর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। নারী স্বাধীনতার ডাক দিয়ে যে আন্দোলন গোটা রাজ্যে শুরু হয়েছিল তা নষ্ট করার জন্যই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই যুবকরা ভাঙচুর চালানোর পরেই অবশ্য সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। হাসপাতালের সামনে থাকা দুষ্কৃতীদের তাড়া করতে দেখা যায় পুলিশ কর্মীদের। উভয়পক্ষের গণ্ডগোলে কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখমও হন। তবে প্রথমে পুলিশ যেভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।