অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: আর পাঁচটা দিনের মতোই সব স্বাভাবিক ছিল। শিয়ালদা - ডায়মন্ড হারবার লোকাল (Sealdah - Diamond Harbour Local)। জনসমুদ্র। রোজের যাত্রীরা ভর্তি। কিন্তু তার মধ্যেই হঠাৎ নজর কাড়ল একজন। কে জানেন? আস্ত একখানা ঘোড়া।
লোকাল ট্রেন সফরে ঘোড়া
শিয়ালদা থেকে ডায়মন্ডহারবার লোকাল ট্রেনে সফর করতে বেরিয়েছে এক ঘোড়া (horse)। হাজারো যাত্রীর মধ্যে নজর কাড়ছেন তিনি। এমন দৃশ্য কি আর সচরাচর দেখতে পাওয়া যায়? ব্যস! সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মুঠোফোনে ক্যামেরাবন্দি করেন তাঁদের সফরসঙ্গীকে। প্রথম যখন ট্রেন চালু হয় তখন তাকে ঘোড়াই টেনে নিয়ে যেত। কিন্তু এবার যে আস্ত ঘোড়াকেই টেনে নিয়ে চলেছে ট্রেন। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সফরের ছবি পোস্ট হতেই ভাইরাল।
কার ঘোড়া? কেনই বা সে চড়ল ট্রেনে?
বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬.৪৫ মিনিটের শিয়ালদা থেকে ডায়মন্ড হারবার লোকালে চড়ে এই বিশেষ যাত্রী। ভেন্ডারের কামরায় দেখতে পাওয়া যায় ঘোড়াটিকে। কিন্তু পোষ্যকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সফর করাতে গিয়ে সমস্যায় পড়লেন ঘোড়ার মালিকই। ঘোড়া যে রাস্তায় না দৌড়ে ট্রেনে সওয়ার হয়েছে তা মোটেই খুব হাল্কাভাবে নিচ্ছে না রেল পুলিশ। এই সফরের কথা জানতে পেরেই ঘোড়ার মালিককে আজ গ্রেফতার করেছে জিআরপি (GRP)।
জানা গেছে, দক্ষিণ দূর্গাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছিল ওই ঘোড়া ও তার মালিক। এই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরদৌড় হয়। মনোরঞ্জনের জন্য। এই সময়ে ক্ষেত থেকে ধান তোলা হয়ে যায় ফলে জমি ফাঁকা থাকে। এবং সেখানেই ঘোড়দৌড় হয়। এই মালিক তার ঘোড়াকে নিয়ে সেখানেই গিয়েছিল। এরপর বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে ওঠে তারা।
কিন্তু ঘোড়া নিয়ে লোকাল ট্রেনে সফর বেআইনি। যদি একান্তই ঘোড়া নিয়ে সফর করতে হয় তাহলে ফার্স্ট ক্লাস বা দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট কাটতে হয়। সেখানে সফরের আগে পোষ্যের ওজন করাতে হয়। সাধারণত পোষ্য কুকুর বা বেড়াল নিয়েই লোকে যাতায়াত করেন। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট 'ডগ বক্স' বা 'ক্যাট বক্স'-এ পোষ্যকে নিয়ে যাতায়াত সম্ভব। অন্যদিকে ঘোড়ার মতো বড় প্রাণী নিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে উপায় হচ্ছে এক্সপ্রেস বা দূরপাল্লার মালগাড়িতে নিয়ে যেতে হয়। সেখানে লোকাল ট্রেনের ভেন্ডার কামরায় ঘোড়ায় হতভম্ব সকলেই। রেলের তরফে জানানো হয়েছে যে তাদের পক্ষে থেকেও নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: Malda News: ১৫ কেজি, ১৪ কেজি ওজন এক একটির, গোপন অভিযানে ১৯টি কচ্ছপ উদ্ধার
রেলের তরফে বলা হয়, 'যে স্টেশন থেকে ঘোড়া ও তার মালিক ট্রেনে চড়ে ও যেখানে নামে দুটোই বেশ ছোট স্টেশন। ফলে সেখানে সবসময় আরপিএফ থাকে না। আর রাতের দিকে ট্রেনের মহিলা কামরায় পুলিশি নজরদারি বেশি থাকে। ফলে সকলেরই এই ঘটনা চোখ এড়িয়ে যায়।'
অভিযুক্ত ওই ঘোড়া মালিকের নাম গফুর আলি মোল্লা। তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে অ্যাক্টে ১৪৫, ১৪৭ ও ১৫৫ এই তিন ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে ভাইরাল হওয়া ছবি ও রাজ্য পুলিশের সহায়তায় সোনারপুর আরপিএফ তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।