সুনীত হালদার, হাওড়া : বর্ধমানের ছায়া হাওড়ার ঘুসুড়িতে। ফের মদে বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছু়ড়ি। হাহাকার মৃতদের পরিবারে। অসহা আর্তি , ' বিষ মদ খেয়ে মানুষটা চলে গেল, এখন পরিবার, ছোট্ট ছেলেটাকে দেখবে কে ! ' আবার কারও অভিযোগ, ওই অঞ্চলে এমন অনেক বিষ মদের ঠেকই তো রয়েছে, সেগুলো কেন তুলে দেওয়া হচ্ছে না ?
৬ জনের মৃত্যু
ঘুসুড়ির ধর্মতলা এলাকায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে । পরিবারের দাবি, মদে বিষক্রিয়ার জেরেই এদের মৃত্যু। হাসপাতালে ভর্তি আরও কয়েকজন। পরিবারের লোকেদের দাবি, মদ খেয়ে আসার পরই অসুস্থ বোধ করছিলেন তারা । অসহায় স্ত্রীর কান্না ' মদ খেয়ে এসে সেই যে শুয়ে পড়ল ... কখন যে মরে গেল '
' মদ-লটারিতে শেষ হয়ে যাচ্ছে মানুষ'
হাওড়ার এই ঘটনার পরই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক আকচাআকচি। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দল গুলি। 'বাংলায় মদ-লটারিতে শেষ হয়ে যাচ্ছে মানুষ', মন্তব্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। তিনি বলেন, সরকারের সব থেকে বেশি আয় এই মদ থেকে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের হাতে যে টাকা দিচ্ছেন, তা চলে যাচ্ছে পরিবারের পুরুষদের হাতে। সেই টাকায় তারা মদ খাচ্ছে। তাই এভাবে মানুষ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ' প্রায় সুর মিলিয়েই বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, মদের রাজস্বেই চলছে রাজ্য । কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী 'রাজ্যে সংগঠিত অপরাধ চলছে' । অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, সরকার ব্যবস্থা নেবে। উল্টে বাম সরকারকে খোঁচা দিয়ে তাঁর প্রশ্ন, বাম সরকার শেষ বছরে কত মদের দোকানের লাইসেন্স বিলি করেছে জানেন ?
চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর
এই ঘটনায় ছড়িয়েছে উত্তেজনা। সকালে চোলাইয়ের ঠেকে ভাঙচুর চালান স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, মালিপাঁচঘড়া থানার পিছনে রেললাইনের ধারে নিয়মিত বসে চোলাইয়ের ঠেক। পুলিশ সব জেনেও নিষ্ক্রিয়। সেখানে জাল মদও তৈরি হয় বলে অভিযোগ।
খাবার, নাকি মদ খেয়ে বিষক্রিয়া, তা এখনও নিশ্চিত নয়, ময়নাতদন্ত হবে। নমুনা সংগ্রহ করবে ফরেন্সিক দল, জানাল পুলিশ। সকালে ঘটনাস্থলে যান হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।