সুনীত হালদার, টিকিয়াপাড়া : আগ্নেয়াস্ত্র (Firearms) ও গুলি-সহ এক অস্ত্র পাচারকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সুরজ রায় ওরফে রাজা। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ এলাকায়। ধৃতের কাছ থেকে ৩টি বিদেশি পিস্তল এবং ১৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে টিকিয়াপাড়া (Tikiapara) স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ।
গত ১৯ জুন হাওড়ার বামুনগাছিতে বেণারস রোডে এক মদ দোকানের মালিকের মাথায় রিভালভারের বাঁট দিয়ে আঘাত করে ১১ লক্ষ টাকা ডাকাতি করে একদল দুষ্কৃতী। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে পাঁচ জনকে। ৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে পার্থ দাস ওরফে রনি নামে এক যুবককে গতকাল গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সময় জানা যায়, ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রের জন্য তারা যোগাযোগ করেছিল মুর্শিদাবাদে সুরজের সঙ্গে। সুরজের থেকে তারা আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল। অপারেশন শেষে লুঠের ২ লক্ষ টাকা ফের অস্ত্র কেনার জন্য বরাত দিয়েছিল।
মঙ্গলবার সকালে সুরজ ওই অস্ত্র টিকিয়াপাড়া এলাকায় গোপনে রনিকে হস্তান্তর করবে বলে ঠিক হয়। খবর পেয়ে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ ফাঁদ পাতে। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ভোরবেলা থেকে নজর রাখছিলেন গোটা এলাকায়। অবশেষে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে সুরজ সেখানে এলে পুলিশ তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে পুলিশ ২টি ৭ এমএম পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ১টি সিক্সার পিস্তল এবং ১৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা শুরু করা হয়েছে। এর পেছনে বড় ধরনের আন্তঃরাজ্য চক্র রয়েছে বলে ধারণা তদন্তকারীদের ।
গত জুলাই মাসে গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় (Firearms Recovery) বসিরহাটের (Basirhat) মাটিয়া বাজার থেকে। সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় এক যুবককে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম মোমিন মণ্ডল।
গভীর রাতে পুলিশ মাটিয়া বাজার এলাকা থেকে মোমিন মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। ধৃত যুবকের বাড়ি বসিরহাট থানার গোঠরা এলাকায় বলে জানা যায়। ঠিক কী উদ্দেশ্যে মাটিয়ে বাজার এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা মোমিনের? সঙ্গে আর কেউ ছিল কি? কোথা থেকে গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র পেল সে? কে দিয়েছিল? জানতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এ রাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার নতুন কোনও ঘটনা নয়। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ধরনের ঘটনার কথা কম-বেশি প্রায়ই উঠে আসছিল। এর আগে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে এক বিজেপি নেতার বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-বোমা উদ্ধার হয়। ঘটনার সূত্রপাত ভাইয়ে-ভাইয়ে সম্পত্তি সংক্রান্ত অশান্তি ঘিরে। সেই তদন্তে গিয়ে পূর্বস্থলীতে বিজেপি নেতার বাড়ি আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার হয়। ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬টি সকেট বোমা উদ্ধার করেছিল নাদনঘাট থানার পুলিশ। বিজেপি নেতার বাড়িতে গেলে তাঁর ভাইরাই অস্ত্র ও বোমা মজুতের কথা জানান বলে পুলিশের দাবি। পারিবারিক বিবাদের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় বিজেপি নেতার ছেলে ও দুই ভাইকে।