ভাস্কর ঘোষ, বালি: হাওড়ার বালিতে বেপরোয়া গতিতে পালানোর সময় সিভিক ভলান্টিয়ারের তৎপরতায় ধরা পড়ল বাইক চোর। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বালি থানার পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় এক বাইক আরোহীকে দেখে সন্দেহ হয় সিভিক ভলান্টিয়ার ইমরান আনসারির। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বাইক চালকের কাছে গাড়ির চাবি অথবা নথি কিছুই নেই। অভিযোগ, সেইসময় সিভিক ভলান্টিয়ারকে বাইক বিক্রির টাকার ভাগ দেওয়ার টোপ দেয় বাইক চোর। এরপরই বালি থানায় ফোন করেন সিভিক ভলান্টিয়ার। ঘটনাচক্রে সেইসময় থানায় হাজির হন বাইকের মালিক। বাইক চুরির পিছনে বড়সড় কোনও চক্র রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
কিছুদিন আগে হাওড়ার একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে চুরির কিনারা করতে গিয়ে তাজ্জব বনে যান পুলিশকর্মীরা। বাবা পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। মা ছিলেন হাই স্কুলের শিক্ষিকা। আর তাঁদের ইংরেজিতে এমএ পাস ছেলে কিনা আন্তঃজেলা চুরিচক্রের পাণ্ডা! ৩২ বছরের সুদর্শন যুবক সৌমাল্য আসানসোলের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রথমে বিভিন্ন ফ্ল্যাটবাড়িতে রেকি করে নিতেন তিনি। তারপর সঙ্গীকে নিয়ে অপারেশন চালাতেন সেখানে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আসানসোল, হুগলি এবং হাওড়া জেলায় ছড়িয়ে তাঁর নেটওয়ার্ক।
পুলিশ জানতে পেরেছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ. পাস সৌমাল্য। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৮ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে চুরিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন এই তরুণ। আসানসোলে ১৬টি এবং হাওড়া ও হুগলিতে ৬টি চুরির ঘটনায় পুলিশের খাতায় তাঁর নাম রয়েছে। গত বছর মার্চে আসানসোলে একটি চুরির ঘটনায় জেল হয় সৌমাল্যর। ছেলের কুকীর্তি জেনে আত্মঘাতী হন মা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর এপ্রিলে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় সঙ্গী প্রকাশ শাসমলকে নিয়ে নতুন ডেরা তৈরি করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। হাওড়ার আন্দুল স্টেশন রোড লাগোয়া একটি অ্যাপার্টমেন্টে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া জানিয়েছেন, ‘সাঁকরাইল থানার পুলিশ ৯ জুন জনৈক অভিযান ঘোষের কাছ থেকে তাঁর বাড়িতে চুরির অভিযোগ পায়। তার মধ্যে ১৮০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম সোনা হাতানোর অভিযোগও ছিল। ওই ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা আগ্নেয়াস্ত্রের উপস্থিতিও পাই। সৌমাল্য চৌধুরী ও তাঁর সহযোগী প্রকাশ শাসমল, বিভিন্ন ক্লু ঘেঁটে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক কেস রয়েছে। একটা এজেসি বোস রোডে, একটা বালিতে, একটা উত্তরপাড়া, একটা জগাছায়, আমরা যা খবর পেয়েছি, তাতে তারা মূল কাজটা আসানসোল এলাকাতেই করত।’