সুনীত হালদার, হাওড়া: প্রতি বছর শীত পড়লেই হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান উলুবেড়িয়ার (Uluberia) গড়চুমুক (Garchumuk) পর্যটন কেন্দ্রে। কিন্তু এ বছর যেন উল্টো চিত্র। গত ৬ মাস এই পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় চারদিকে ভরে গেছে আগাছায়। এমনকি ওই পর্যটন কেন্দ্রের দরজা বন্ধ থাকায় দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা  ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও হাওড়া জেলা পরিষদের আশ্বাস এই শীতের (Winter) মরসুমে খুব শীঘ্রই ওই কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।


উলুবেড়িয়ায় দামোদর নদীর তীরে তিয়াত্তর একর জমির উপর হাওড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে আটের দশকে গড়ে উঠেছে গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র। আগে এর নাম ছিল গড়চুমুক মৃগদাব। প্রতিবছর শীত পড়তেই কলকাতা এবং আশেপাশের জেলা থেকে হাজার হাজার পর্যটক সপরিবারে ভিড় জমাতেন। 


ওই পর্যটন কেন্দ্রের মূল আকর্ষণ ছোট চিড়িয়াখানা। সেখানে রকমারি হরিণ,  কুমির, সজারু, বাঘরোল, ময়ূর, সাপ এবং হরেকরকম পাখির খাঁচা আছে। কোবিডের সময় এই পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও পরে নতুনভাবে সেজে ওঠার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ন্যাশনাল জু অথরিটির পক্ষ থেকে চিড়িয়াখানা তৈরীর অনুমতি পাওয়ার পর ওই পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে পশু পাখিদের খাঁচার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।                       


আরও পড়ুন, ফের ঘূর্ণাবর্তের ভ্রুকুটি, শীতের আমেজ কেটে ফের ঊর্ধ্বমুখী পারদ?


জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, এবারে নীল গাই, স্টার টাটেল এবং ডান্সিং ডিয়ার আনা হচ্ছে। এছাড়াও দিঘির মধ্যে রকমারি বক এবং হাঁস প্রজাতির পাখির থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে একদল পর্যটক ওই কেন্দ্রে ভাঙচুর চালায়। সেই সময় ক্ষতি হয় টিকিট বিক্রয় কেন্দ্র এবং বাগানের একাংশের। 


এরপর ওই কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে আগাছা। বন্য পশুর খাঁচার চারপাশে অথবা বাগানের বিভিন্ন অংশে যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই আগাছায় ভরে গেছে। কেন্দ্রের মধ্যে শিশুদের জন্য যে পার্ক তারও অবস্থাও বেহাল। এদিকে নভেম্বর মাস আসতেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। তাদের কাছে আগাম খবর না থাকায় তারা এতদূর এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ তাঁরা। 


এদিকে হাওড়া জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন ওই পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে ছোট চিড়িয়াখানা তৈরির কাজ চলছে। তাই বন্ধ রাখা হয়েছে। আরও নতুন ধরনের বন্যপ্রাণী আনা হচ্ছে। ফলে তাদের খাঁচা তৈরি করতে একটু সময় লাগছে। তিনি আশ্বাস দেন দ্রুত আগাছা পরিষ্কার করে এই শীতের মরসুমে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।



এই শীতকালে কবে এই পর্যটন কেন্দ্র খোলা হবে কার্যত তার দিকেই তাকিয়ে আছেন পর্যটকরা।