অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সুনীত হালদার, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হাওড়া : সকাল-দুপুর-সন্ধে। পানীয় জলের জন্য তিন বেলা অধীর অপেক্ষায় থাকছেন বহু মানুষ। কিন্তু কল খুলতেই বেরিয়ে আসছে ঘোলা জল। হাওড়ায় এখনও এই ছবি! অন্যদিকে কলকাতায় মঙ্গলবার সেই অর্থে ঘোলা জল আর না বেরলেও, কলকাতার পরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তবাগানে জলের প্রেসার ছিল অত্যন্ত কম।  
একই সমস্যা হুগলির কিছু জায়গাতেও। জোড়া সমস্যায় মঙ্গলবারও ভুগতে হল গঙ্গার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি না নিয়ে, অনেকেই এখনও জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। দত্তবাগানের বাসিন্দা পূজা জয়সওয়াল বলেন, বাড়িতে বাচ্চা আছে, জল নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে। ওকে মিনারেল ওয়াটার খাওয়াচ্ছি। দত্তবাগানেক বাসিন্দা  মিঠু মাঝিরও তাই অভিযোগ। দত্তবাগান ছাড়াও মুরারিপুকুর, করবাগানেও জলের প্রেশার কম ছিল। 


কলকাতা পুরসভার তরফে দাবি করা হয়েছে, এক-দু দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। জল পরিষেবা নিয়ে বারবার অভিযোগ আসার পর, এদিন দত্তবাগানে পরিদর্শনে যান কলকাতা পুরসভার তিন নম্বর বোরো কোঅর্ডিনেটর। কলকাতা পুরসভার ৩ নং বোরোর কোঅর্ডিনেটর অনিন্দ্য রাউত জানান, জলের গুণগত মান ঠিক রাখতে শোধনে সময় লাগছে। পুরসভার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পলতা জল পরিশোধন কেন্দ্রে, ঘোলা জলের পরিমাণ আড়াই হাজার থেকে কমে হয়েছে, ৮০০ মিটার ট্রান্সমিশন ইউনিট বা MTU। গার্ডেনরিচে ১২০০ থেকে কমে হয়েছে ৭০০ MTU।

কলকাতায় এদিন ঘোলা জলের সমস্যা কিছুটা মিটলেও, পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি হাওড়া পুরসভার দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডে। যদিও, ঘোলা জল বেরনোর অন্য কারণ তুলে ধরা হয়েছে হাওড়া পুরসভার তরফে। হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাংশু দাস, 'স্থানীয় এলাকায় মাটির নিচের পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার কারণে এই পরিস্থিতি হতে পারে। খতিয়ে দেখছি। এর পাশাপাশি তিনি জানান ওইসব এলাকায় পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হবে। পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের দুটি পাম্পে মাটি এবং কাপড় ঢুকে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজ সন্ধ্যের মধ্যে দুটো পাম্প সারিয়ে দেওয়া হবে। জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।'


ঘোলা জলের সমস্যায় যখন জেরবার গঙ্গার দুই পাড়ের বাসিন্দারা, তখন রাজ্য সরকারকে নিশানা করে ট্যুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 

https://publish.twitter.com/?query=https%3A%2F%2Ftwitter.com%2FSuvenduWB%2Fstatus%2F1445285547845373953&widget=Tweet বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ' মেয়র বলেছেন জল পরিশোধন করা যাচ্ছে না, জল তো অনেক জায়গায় জমেছে, সব জায়গায় তো ঘোলা জল নেই' 


এরইমধ্যে কিছুটা স্বস্তির খবর রয়েছে হুগলিতে। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর, মঙ্গলবার পরিষ্কার জল পেয়েছেন শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়ার বাসিন্দারা।