সুনীত হালদার, হাওড়া: বছরের পর বছর একই জল যন্ত্রণা। অল্প বৃষ্টিতেই দাঁড়িয়ে যায় জল। রাস্তাঘাট, অলি গলি হয়ে পড়ে জলমগ্ন। ফি বছর এই জলছবি ফিরে আসে হাওড়া পুর এলাকায়। এবারের বর্ষাতেও হাওড়া পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৫টিতে দাঁড়িয়ে যায় জল। সেই জল অনেকদিন পর্যন্ত নামানো সম্ভব হয়নি। টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল জমে বিঘ্ন ঘটে ট্রেন চলাচলে।


হাওড়া শহরের এই পুরনো সমস্যার সমাধানে এবার উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। নিকাশি সমস্যার সমাধানে নেদারল্যান্ডসের একটি বেসরকারি সংস্থার পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সংস্থার এক বিশেষজ্ঞর সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার ও পুর আধিকারিকরা। পরে নেদারল্যান্ডসের ওই সংস্থার বিশেষজ্ঞ ঘুরে দেখেন নাজিরগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন।  


নেদারল্যান্ডসের নিকাশি বিশেষজ্ঞ পিটার পল ভ্যান মিল জানিয়েছেন, ‘জল জমা ও নিকাশি সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হাওড়া শহরের জল জমার সমস্যা পুরনো। এবছরও শহর জলমগ্ন হয়েছে। এটা মানুষের একটা বড় সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানে একটা সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি করার চেষ্টা করব যাতে আর এই সমস্যা পোহাতে না হয়।’


হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘পরামর্শের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞকে নিয়ে এসেছি। খোলা ড্রেনে শহরবাসী যাতে আবর্জনা না ফেলেন, তা দেখার জন্য উনি প্রাথমিক পরামর্শ দিয়েছেন। এ নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’


এদিকে, হাওড়া পুরসভার এই উদ্যোগ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেছেন, ‘বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনলেও জল নামবে না। কারণ কাটমানি। টাকার লেনদেন না কমলে সমস্যা মিটবে না।’


নেদারল্যান্ডসের নিকাশি বিশেষজ্ঞ আরও দু-তিন দিন হাওড়ায় থাকবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করারও কথা রয়েছে। কিন্তু এতকিছুর পর কি আগামী বর্ষায় জল যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই মিলবে? সেদিকেই তাকিয়ে হাওড়াবাসী।