সুনীত হালদার, হাওড়া: প্রকৃতি এবং অতিমারির (COVID Pandemic) রোষেই দিন কাটছে বিগত দু’বছর ধরে। তার মধ্যেই অবাক করা দৃশ্য ধরা পড়ল সাঁতরাগাছি (Santragachi)ঝিলে। বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে নতুন বছরের শুরুতেই সেখানে ভিড় জমিয়েছে পরিযায়ী পাখির দল (Bird Migration)। প্রতি বছরই ঝিলে পাখির সংখ্যা গোনা হয়। তাতেই দেখা গিয়েছে, অন্য বছরের তুলনায় এ বারে পাখির সংখ্যা বেশি। করোনার প্রকোপের মধ্যেও প্রকৃতির এমন কারসাজিতে খুশি পক্ষীপ্রেমীরাও।
ফি বছর শীত পড়তেই হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি ভিড় জমায় সাঁতরাগাছি স্টেশন লাগোয়া সাঁতরাগাছি ঝিলে (Howrah News)। সাধারণত অক্টোবর মাসের শেষ দিক থেকে হিমালয় পেরিয়ে অথবা পাদদেশ অঞ্চল থেকে পরিযায়ী পাখিরা খাবারের সন্ধানে এখানে চলে আসে। এ বছর দেরিতে শীত পড়ায় পরিযায়ী পাখিরা একটু দেরিতেই এসেছে। তবে মাঝে কয়েকদিন বেশ ভাল রকম ঠান্ডা পড়ায় দলে দলে পরিযায়ী পাখিরা এখানে ভিড় জমাতে শুরু করেছে।
প্রকৃতি সংসদের পক্ষ থেকে শনিবার সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি গণনার কাজ হয়। জানা গিয়েছে, এ বছরে মোট ৬ হাজার ৭৪২ পরিযায়ী পাখি এসেছে। এদের মধ্যে তিনটি ট্রান্স হিমালায়ান প্রজাতির পাখি রয়েছে। তারা হল, লেসার হুইসলিং বার্ড, গাডওয়াল এবং নর্দান পিন্টেল। এদের সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬৭৪, ৮ এবং ১। এ ছাড়াও ১১ প্রজাতির পাখি এসেছে। এদের মধ্যে কমন মুরহেন, ব্রোঞ্জ জাকানা, পার্পল হেরন, হোয়াইট ওয়াগটেল, লিটল কর্মরান্ট, গ্রেট ইন্ডিয়ান পন্ড হেরন, হোয়াইট থ্রোটেড কিংফিশার এবং অন্যান্য পাখি রয়েছে।
আরও পড়ুন: Malda News: রাতের অন্ধকারে চুরি মন্দিরের সামগ্রী, ২৪ ঘণ্টায় সমাধান করল পুলিশ
প্রকৃতি সংসদের পক্ষ থেকে সংগঠনের সদস্য প্রসেনজিৎ দাঁ জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এ বারে পাখির সংখ্যা বেশি হলেও প্রজাতির সংখ্যা কমেছে। বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ঝিলে কচুরিপানার পরিমাণ নির্দিষ্ট থাকার ফলে পাখিরা অনেক স্বচ্ছন্দে বসবাস করতে পারছে। কারণ চারিদিকের শব্দ দূষণ এবং উপদ্রব থেকে কচুরিপানায় সহজেই লুকিয়ে থাকা যায়। তাই আগের থেকে কচুরিপানার বংশ বৃদ্ধি পরিযায়ী পাখিদের পক্ষে সহায়ক হয়েছে।
প্রকৃতি সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে ১৬ প্রজাতির ৫ হাজার ৬৯৪ পাখি এসেছিল। এদের মধ্যে লেসার হুসলিং ডাক ছিল ৫ হাজার ৬০১। পরের বছর এসেছিল ১২ প্রজাতির ৫ হাজার ৬৫১ পাখি।এর মধ্যে লেসার হুইসলিং বার্ড এসেছিল ৫হাজার ৫৩৬। এ দিকে পরিযায়ী পাখি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন পক্ষীপ্রেমীরা। অনেকে বাইনোকুলার দিয়ে পাখি দেখছেন এবং ক্যামেরায় লেন্সবন্দি করছেন পাখিদের। পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি সকলে।