সুনীত হালদার,হাওড়া: রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে (Russia-Ukraine War) অনেক বঙ্গ তনয়েরই কেরিয়ারগ্রাফ প্রভাবিত হয়েছে। নিজের ডাক্তারই পড়ার কী হবে কার্যত এই চিন্তাতেই ঘুম ছুটে গিয়েছিল আমতার (Howrah Amta) যুবক মিখাইল আলমের। দেশে ফিরেও ডাক্তারি পড়া তার হল না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফের ইউক্রেনে ফিরে যাচ্ছেন মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মিখাইল। আজ এই উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে দমদম বিমানবন্দরের (Dumdum Airport) উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন তিনি।


গত মার্চ মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে আটকে পড়েছিলেন ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া আমতা ২ নং ব্লকের নারিট গ্রামের বাসিন্দা মিখাইল আলম। ইউক্রেনের ইভানো শহরে ইভানো ফ্রানকিভিস্ক ন্যাশনাল মেডিকেল  ইউনিভারসিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। যুদ্ধের কারণে বহু কষ্টে ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়ায় পৌঁছান। পরে বহু কষ্টে সরকারি প্রচেষ্টায় গত মার্চ মাসে বাড়ি ফিরেছিলেন মিখাইল। ৬ বছরের কোর্সের অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছিল। দেশে ফেরার পর কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, এখানেই পড়াশোনা শেষ করতে পারবে ওদেশ থেকে ফিরে আসা মেডিকেল ছাত্ররা। কিন্তু কোনও পক্ষ‌ই কথা রাখেনি।


কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক অনুমতি না দেওয়ায় তাঁরা ভারতীয় মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে মামলাও চলছে। তাই যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ না হলেও এক প্রকার বাধ্য হয়েই ইউক্রেনে ফিরতে হচ্ছে, তার মত ইউক্রেনে পড়তে যাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের। মিখাইল জানান রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্র্যাকটিকালের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ভর্তির বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাভুক্ত। এই যুদ্ধের মধ্যে ছেলেকে ছাড়তে নারাজ মা কান্না থামতেই চাইছে না। তাঁর বাবাও জানিয়েছেন খারাপ লাগলেও ছেলে পড়াশোনার জন্য ফিরে যাচ্ছে। তাই তার মনও খুব খারাপ। যদিও সব উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে আজ‌ই ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছেন মিখাইল।


আরও পড়ুন, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড়, সায়গলের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা


প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে বিপদে আপদে বরাবরই পরস্পরের পাশে থেকেছে ভারত এবং রাশিয়া। পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে, নিরপেক্ষ অবস্থানই বজায় রাখে ভারত। গোটা বিশ্ব যখন রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ব্যস্ত, সেই সময় চিন এবং ভারতই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান থেকে বিরত থাকে। বরং শান্তিপূর্ণ ভাবে যুদ্ধে ইতি টানার পক্ষে সওয়াল করে দুই দেশ। তা নিয়ে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিতে সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। তার পরও দিল্লির তরফে বদলায়নি। পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতেও সেই অবস্থানই তুলে ধরেন মোদি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে মোদির সেই মন্তব্যই তুলে ধরেন মাকরঁ।