সুনীত হালদার, হাওড়া: রূপনারায়ণে নৌকাডুবি (Boat Capsized)। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিখোঁজ কমপক্ষে ৫। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছে এক শিশু। তার সঙ্গে নিখোঁজ এক কিশোর, দুই বৃদ্ধা ও এক বৃদ্ধা।
রূপনারায়ণ নদে নৌকাডুবি, নিখোঁজ অন্তত ৫
রূপনারায়ণ নদে (Roopnarayan River) নৌকাডুবি হয়ে নিখোঁজ কমপক্ষে ৫। এক শিশু ও এক কিশোর-সহ নিখোঁজ ৫। এদের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি হাওড়া (Howrah) ও একজনের বাড়ি বাগনানের (Bagnan) মানকুর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে দাসপুর থানার দুধকোমরা এবং হাওড়ার বাগনান থানার চিতনান এলাকার মাঝে রূপনারায়ণ নদে। পুলিশ জানিয়েছে নিখোঁজরা হলেন ৭ বছরের ঋষভ পাল, ১৭ বছরের প্রীতম মান্না, অচ্যুৎ সাহা, অমর ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষ। প্রীতমের বাড়ি মানকুরে। বাকি চারজনের বাড়ি হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচুবাগান এলাকায়।
নিখোঁজদের সন্ধানে এলাকার মাঝিদের নিয়ে পুলিশ রূপনারায়ণ নদের মানকুর বাকসি-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করছে। নামানো হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের টিমও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে আসেন জেলাশাসক পি দীপাপ্রিয়া, হাওড়ার গ্রামীণ পুলিশের সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া, আসেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল। জানা গিয়েছে, মোট ১৮ জনের একটি দল মানকুর থেকে নৌকায় চেপে পশ্চিম মেদিনীপুরের দুধকোমরার ত্রিবেনী পার্কে পিকনিক করতে আসে। পিকনিক শেষে তাঁরা ফের নৌকায় চেপেই মানকুরের দিকে ফিরছিলেন।
বাড়ি ফেরার সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। সেই সময়ই কোনও কারণে নৌকা কাত হয়ে যায় এবং তারপরে ডুবে যায়। সকলেই নদীতে পড়ে যান। নৌকা ডুবতে দেখে নদীতে থাকা ও পাড়ে থাকা অন্যান্য নৌকার মাঝিরা নৌকা নিয়ে নদীতে চলে যায়। শুরু করে দেন উদ্ধার কাজ। তাঁরা ১৩ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। বাকিরা এখনও নিখোঁজ।
জানা গিয়েছে, হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচুবাগান থেকে ১৩ জন এসেছিলেন। আর মানকুরের পাঁচজন ছিলেন। মহাদেব কর্মকার ছিলেন মূল উদ্যোক্তা। তিনি তাঁর পরিচিত গণেশ মান্নার বাড়িতে মানকুরে এসেছিলেন। সেখান থেকেই তাঁরা পিকনিক করতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গণেশ মান্না নিজেও এদিন পিকনিকে গিয়েছিলেন। তিনি জানান যাওয়ার সময় নৌকা দুটি খেপে ১৮ জনকে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছিল। আর ফেরার সময় একটি খেপেই সকলকে নিয়ে ফিরছিলেন। আর এতেই সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যাত্রীদের মধ্যে অনেকে বলেছেন নৌকা ছিল নড়বড়ে এবং তাতে জল ঢুকছিল। তারা নৌকার মাঝিকে জল বের করে নৌকা ছাড়ার কথা বললেও তিনি তা শোনেননি বলে অভিযোগ।
এদিকে এই খবর পেয়ে বেলগাছিয়ার লিচুবাগানে নেমে এসেছে দুশ্চিন্তা। জানা গিয়েছে এদিন আটটা-সাড়ে আটটা নাগাদ সকলে যে যার নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়ি করে মানকুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। এখানে সকাল দশটা-সাড়ে দশটা নাগাদ পৌঁছন এবং তারপরেই নৌকা করে দুধকোমরার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে তাঁরা পৌঁছেছিলেন সাড়ে বারোটা নাগাদ। বেলগাছিয়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন বিকেল চারটে-সাড়ে চারটের পর থেকে তাঁরা আর কাউকে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি। সন্ধ্যার পর মানকুরের বাসিন্দাদের ফোন করে জানতে পারেন নৌকাডুবি হয়েছে। এখন সকলের একটাই প্রার্থনা যেন প্রত্যেকে জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।