হাওড়া : হাওড়া সদর হাসপাতালে এক নাবালিকা রোগীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ল্যাবকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুকে যন্ত্রণা নিয়ে গত ২৮ অগাস্ট হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই নাবালিকাকে। গতকাল রাতে সিটি স্ক্য়ান হয় তার। অভিযোগ, সিটি স্ক্য়ানের জন্য় ল্য়াবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হলে নাবালিকার শ্লীলতাহানি করে আনন্দ রাজ নামে এক ল্য়াব অ্য়াটেনডেন্ট। ল্য়াব থেকে বেরিয়ে নাবালিকা বাড়ির লোককে সব খুলে বলে। ঘটনার পর হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।  


এই ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় DYFI । প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংগঠনের কর্মীরা সুপারের ঘর ঘেরাও করে রাখেন। বাইরে অনেক DYFI কর্মী বিক্ষোভ দেখান। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশের আধিকারিকরা। বিক্ষোভে যোগ দেন দীপ্সিতা ধর। তিনি বলেন, "আমাদের ভেবে রাগ হচ্ছে। ক্ষোভে ফেটে পড়ছি। কারণ, যখন আরজি কর নিয়ে, মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তথা গোটা ভারতের মানুষ রাস্তায়, আমাদের হাওড়া জেলার একজন মানুষের এমন সাহস হচ্ছে যে সে একজন নাবালিকাকে হেনস্থা করতে পারে। আমরা সুপারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, যখন একজন নাবালিকাকে স্ক্যান রুমে পাঠানো হচ্ছে, তখন সেখানে কেন একজন মহিলা নার্স থাকবে না ? এই দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। যদি মহিলা নার্স না থাকে, তাহলে বাড়ির কাউকে কেন অনুমতি দেওয়া হবে না ? সেটার দায়িত্বও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। উনি কিছু বলতে পারলেন না। এমন সুপার মানুষ যিনি নিজেই জানেন না হাসপাতালের ভিতরে কী হচ্ছে, তার কাছে আমরা কী আশা করব ?"


একের পর এক ঘটনা !


এদিকে আর জি কর-কাণ্ডে তোলপাড়ের মধ্য়েই বীরভূমের ইলামবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্য়রত নার্সের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে এক রোগীর বিরুদ্ধে। গতকাল রাত ৮টা নাগাদ জ্বর নিয়ে ভর্তি হয় শেখ আবাসউদ্দিন নামে এক ব্য়ক্তি। অভিযোগ, চিকিৎসা করতে গেলে নার্সের শ্লীলতাহানি করে আবাসউদ্দিন। এমনকী কর্তব্য়রত নার্সকে গালিগালাজ করে বলেও অভিযোগ।


অভিযোগকারিণী অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ইলামবাজার থানার পুলিশ। ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিরাপত্তা না পেলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। 


শুধু হাওড়া ও বীরভূমই নয়, এই আবহেই সাত বছরের নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে রণক্ষেত্র উত্তর ২৪ পরগনার মধ্য়মগ্রামের রাজবাড়ি এলাকা। পুলিশের সামনেই অভিযুক্তের বাড়ি ও আত্মীয়র দোকান ভাঙচুর করল উত্তেজিত জনতা। স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য়ার বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। চলল ব্য়াপক ইটবৃষ্টি। উঠল উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগানও। বিশাল পুলিশবাহিনী ও র‍্যাফ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্য়াসের সেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য়া নীলিমা বিবির স্বামী আবদুল হাফিজ বিষয়টি মিটমাট করিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে