সুনীত হালদার, হাওড়া: পুজোর আগে সাউথ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের চালকদের বাস ধর্মঘট। আজ সকালে হাওড়ার শিবপুরের সাউথ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের বাস ডিপোতে তারা অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটে সামিল হন। এর ফলে আন্তঃজেলা বাস পরিষেবা সম্পূর্ণ ব্যাহত হয়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
ওই বাস ডিপোর অস্থায়ী চালকদের দাবি অবিলম্বে সমকাজে সমবেতন, ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত যারা বাস চালাচ্ছেন তাদের চাকরিতে স্থায়ীকরণ, স্থায়ী কর্মচারীদের মতো ছুটি ও অন্যান্য সুবিধা, প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট সহ ১০ দফা দাবির ভিত্তিতে তারা লাগাতার আন্দোলনে নামেন। আজ সকালে শিবপুর ডিপোতে চুক্তিভিত্তিক বাস চালকরা হাতে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হন। তারা তাদের দাবির সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। অস্থায়ী চালকদের কর্মবিরতি চলায় অন্য দিন ওই ডিপো থেকে যেখানে গড়ে ২৫ টি বাস বের হয়, আজ সেখানে মাত্র তিনটি বাস রাস্তায় নামে। সেগুলি স্থায়ী চালকদের দিয়ে চালানো হচ্ছে।
বাস চালকদের অভিযোগ দৈনিক ৫১৯ টাকা মজুরির ভিত্তিতে তারা দীর্ঘদিন কাজ করছেন। মাসে ২৬ দিন কাজ করার থাকলেও তারা প্রতিদিন কাজ পান না। যেহেতু তারা 'নো ওয়ার্ক নো পে'র ভিত্তিতে কাজ করেন তাই তাদের মাসিক আয় মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এতে তাদের সংসার চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এরই প্রতিবাদে তারা আন্দোলনের চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
এদিকে বিভিন্ন জেলার বাস ডিপোতে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন সেইসব ডিপোর সঙ্গে যুক্ত চালকরা। এর ফলে হলদিয়া, দীঘা, মেদিনীপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, বর্ধমান, দুর্গাপুর সহ বিভিন্ন বাস ডিপোতে চালকরা বাস না চালানোর ফলে আন্তঃজেলা বাস পরিষেবা ব্যাহত হয়। বাস চালকরা জানিয়েছেন তারা বারবার তাদের দাবির সমর্থনে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দাবির কথা জানান। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোন সুরাহা হয়নি। তারা চাইছে অবিলম্বে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক।
অন্যদিকে, বেতন বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে বুধবার থেকে কর্ম বিরতির ডাক দিলেন সিউড়ি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার অস্থায়ী কর্মীরা। এদিন এই ডিপোর সমস্ত অস্থায়ী কর্মীরা তাদের কাজকর্ম বন্ধ রেখেছেন এবং বাস চলাচল একপ্রকার বন্ধ। এমনকি তাদের তরফ থেকে কর্মবিরতি রাখার পাশাপাশি ডিপোর অন্যান্য বাস চলাচলের ক্ষেত্রেও বাধা দেওয়া হয়। তাদের দাবি ৬-৭ হাজার টাকা যে বেতন দেওয়া হয় তাতে তাদের সংসার চলে না। এই বেতন বৃদ্ধি করতে হবে এবং যে সকল অস্থায়ী কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তাদের স্থায়ীকরণ করতে হবে। বুধবার থেকে এইভাবে হঠাৎ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অসুবিধার সম্মুখীন আগত যাত্রীরা। যদিও এই কর্ম বিরতির পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত সংস্থার আধিকারিকদের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।