সুনীত হালদার, হাওড়া: রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া এবার হাওড়ার (Howrah) রামরাজাতলায়। মৃত মাকে তিন দিন আগলে রাখলেন মেয়ে। আজ সন্ধেবেলায় পুলিশ গিয়ে ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর রামরাজাতলার নন্দীপাড়া লেনে দীর্ঘদিন ধরে বাস করতেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মিনতি কুন্ডু। বাড়ির নাম ময়ূর ভবন। দীর্ঘদিন আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। তিনি মেয়ে সুমনা কুণ্ডুর (৪৮) সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন। একমাত্র ছেলে সুদীপ্ত কুণন্ডু দীর্ঘদিন ওই বাড়ি ছেড়ে পাশের পাড়ায় থাকতেন।
মঙ্গলবার বিকেলে সুমনা তার এক প্রতিবেশীকে ডেকে বলেন তাঁর মা গত রবিবার ভোরবেলায় মারা গেছেন। তিনি কাউকে খবর দিতে চান না। তিনি চান না তাঁর মাকে কেউ তার বাড়ি থেকে নিয়ে যাক। বাড়িতেই মাকে সমাধিস্থ করার জন্য তিনি মিস্ত্রির খোঁজ করছিলেন। এরপর ওই প্রতিবেশী মহিলা পাড়ার লোকেদের বলেন। পাড়ার লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে খবর দেয় ওই মহিলার দাদা সুদীপ্তকে। এছাড়াও খবর দেওয়া হয় জগাছা থানায়। এদিন সন্ধেয় জগাছা থানার পুলিশ এসে ওই দেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে মেয়ে সুমনা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই মায়ের মৃত্যুর পর কাউকে কিছু বলেননি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জগাছা থানার পুলিশ। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে এলাকার মানুষ ভিড় জমায় ওই বাড়িতে।
এর আগে দক্ষিণ দিনাজপুরেও এমনই ঘটনা ঘটেছিল। মৃত দিদিমার দেহ আগলে বসবাস করছিলেন তাঁর নাতনি। তিন দিনের দিন বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর জানতে পারে স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর কুমারগঞ্জ থানার ভোঁওড় গ্রামে। মৃত বৃদ্ধার নাম সন্ধ্যা রানী ঝাঁ। গতকাল মহিলার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট হাসপাতালে পাঠায় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। পাশাপাশি নাবালিকাকে আপাতত কুমারগঞ্জ খাবারের ব্যবস্থা করেছে। দেখভালের জন্য বাড়িতে সিভিক ভলেন্টিয়ার পোস্টিং করা হয়েছে। প্রশাসনের মাধ্যমে তাঁকে হোমে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
পরে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা রানী ঝাঁর স্বামী অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। এক মেয়ে ও তাঁর স্বামীও অনেক দিন আগে মারা গেছেন। এক ছেলে থাকলেও তাঁর কোনও খোঁজ নেই। এদিকে সন্ধ্যা রানী দেবীর নাতনি রানী চৌধুরী মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাঁকে নিয়েই কোনও রকমে বাস করতেন তিনি। বয়সের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সন্ধ্যা রানী। নাতনিকে নিয়েই থাকতেন। অভাব-অনটন থাকায় নাতনির চিকিৎসা করাতে পারেন