সুনীত হালদার, হাওড়া: দেবীপক্ষে রাজ্যজুড়ে আলোর রোশনাই, উৎসবের আমেজ। সারা রাজ্য যখন ভাসছে পুজোর আনন্দে, তখনও জলে ভাসছে হাওড়ার বাঁকড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। কোথাও কোমর সমান জল, কোথাও আবার তার চেয়েও বেশি! বহু বাড়িতেই এখনও জল জমে রয়েছে। যাতায়াতের ভরসা শোলা দিয়ে তৈরি ভেলা! উৎসবের আনন্দ থেকে বহু দূরে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন এই এলাকার মানুষজন। 


স্থানীয় বাসিন্দা সন্ন্যাসী বাগ জানিয়েছেন, ‘দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে এবার আর সেভাবে আনন্দ করতে পারব না। সব আনন্দ মাটি।’


সত্যভামা শী নামে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘ভেলায় করে যেতে হচ্ছে। জল বের হচ্ছে না। আমাদের সমস্যার মধ্যে দিন কাটছে।’


বাড়ি-ঘর ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় মোবারক হোসেন গার্লস হাইস্কুলে। এই সমস্যার জন্য বেহাল নিকাশি নালাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। ফতেমা বিবি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, ‘বৃষ্টির পর এলাকা থেকে জল না বেরোনোর কারণেই এই সমস্যা। নিকাশি নালা ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না।’


বাঁকড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও তৃণমূল নেতা শেখ মেহের আলি অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘হাওড়া শহরের জল পচা খাল দিয়ে গঙ্গায় মেশে। কিন্তু এবার অতিবর্ষণের ফলে খালের জল না নামায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই এলাকায় জল জমে রয়েছে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমরা দুর্গতদের পাশে আছি।’


এদিকে, পুজোর মধ্যে ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আগামী দু’ দিন বাংলায় বর্ষা বিদায় পালা চলবে। সপ্তমী পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকলেও বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। অষ্টমী থেকে দশমী কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, এই সাত জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পুজোয় উত্তরবঙ্গের আকাশ থাকবে পরিষ্কার।  আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এই দুর্গত মানুষজন।