সুনীত হালদার, সালকিয়া (হাওড়া): হোমওয়ার্ক না করার ‘অপরাধ’-এ এক ছাত্রের শরীরে গরম মোম ঢেলে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠল গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। শরীরে গরম মোম পড়ায় গুরুতর আহত দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্র। গোলাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রের মা। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।


সালকিয়ার এক ফুল বিক্রেতার তিন ছোট ছেলে-মেয়ে স্থানীয় গৃহশিক্ষক দীপক প্রজাপতির কাছে পড়ত। গত ১৪ অগাস্ট সন্ধেবেলা দীপক ওই ফুল ব্যবসায়ীর বাড়িতে পড়াতে যান। সেই সময় বাড়িতে তিন পড়ুয়ার বাবা-মা ছিলেন না। তিন ভাই-বোন একসঙ্গে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে বসে। পড়াতে বসে কিছুক্ষণ পরে পড়া ধরতে শুরু করেন গৃহশিক্ষক। দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্র পড়া বলতে পারেনি। ছাত্র হোমওয়ার্ক করেনি দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন গৃহশিক্ষক। অভিযোগ, এরপরেই তিনি মোমবাতি জ্বেলে গরম মোম ওই পড়ুয়ার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢেলে দেন। এর পাশাপাশি তিনি শিশুটির শরীরে গরম হাতা দিয়ে ছ্যাঁকা দেন বলেও অভিযোগ। শিশুটির হাতে, পায়ে ও পিঠে বড় বড় ফোসকা পড়ে যায়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে। শিশুটির বাবা-মা বাড়ি ফিরে এলে তাঁদের গোটা ঘটনা জানায় দাদা-দিদি। এরপর স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে শিশুটিকে নিয়ে যান তার বাবা-মা। তার চিকিৎসার পর গোলাবাড়ি থানায় নিয়ে গিয়ে গোটা ঘটনা পুলিশকে জানান শিশুটির বাবা-মা। পরেরদিন হাওড়া জেলা হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করেন।


এরপর গত ১৯ অগাস্ট দীপক প্রজাপতি নামে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গোলাবাড়ি থানায় এফআইআর করেন তার মা। তারপরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় শিশুটির মা বুধবার হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। কমিশনারের নির্দেশে গোলাবাড়ি থানা পুলিশ নড়েচড়ে বসে। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হননি অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক। শিশুটির পরিবার চাইছে অবিলম্বে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হোক।