সুনীত হালদার, হাওড়া: মেরামতির কাজ চলাকালীনই হাওড়ার শ্যামপুরে হুগলি নদীর (Hooghly River) বাঁধে ফাটল ধরল। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে। কাজের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টি বাড়লে এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। দীর্ঘদিন ড্রেজিং না হওয়াতেই সমস্যা বলে দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের।


মেরামতি চলাকালীনই ফাটল হুগলি নদীর বাঁধে


বাঁধের (River Dam Cracked) যে জায়গায় ফাটল ধরেছে, আগেও সেখানে ফাটলদেখা গিয়েছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। তাই একই জায়গায় বারবার ফাটল ধরায় আতঙ্ক। স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস ছয়েক আগে ফাটল ধরায় নদীগর্ভে তলিয়ে যায় হুগলি নদীর বাঁধের একাংশ। শুক্রবার মেরামতির কাজ চলাকালীন ওই একই জায়গায় নতুন করে ফাটল ধরে।তাতে প্রায় ৩০ মিটার নদী বাঁধ বসে যায়। 


স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাস ছয়েক আগে নদী বাঁধে ১৪০ মিটার ধস নেমে তা হুগলি নদীর গর্ভে চলে যায়। সেচ দফতর সেখানে বালির বস্তা, মাটির বস্তা, ভাঙ্গা ইট ফেলে বাঁধ মেরামতি করেছিল এবং বাঁধকে সুরক্ষিত রাখার জন্য গ্রামের দিকের একটি অংশে অন্য আর একটি বাঁধ নির্মাণ করছিল। সেই কাজ চলাকালীনই ৩০ মিটার বাঁধ বসে যায়। গতকাল জোয়ারের পরেই বাঁধের ওই অংশ পুরো ধসে যায় বলে অভিযোগ। নতুন তৈরি অংশ তো বটেই, পুরনো বাঁধেরও কিছুটা অংশ ধসে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  


আরও পড়ুন: Siliguri News: থিকথিকে কালো ধোঁয়া, অগ্নিকাণ্ড মাটিগাড়ার রঙের গুদামে


নিম্নচাপের জেরে রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর মধ্যে হুগলি নদীর বাঁধে ফাটল ধরায় বেলাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত চারটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শ্যামপুর  গ্রামের বাসিন্দা ছায়া বন্দ্যোপাধ্যায় এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘ভাঙন শুরু হওয়ায় বিপদের মধ্যে আছি...যে কোনও মুহূর্তে গ্রামে জল ঢুকতে পারে।’’ পূর্ব বাসুদেবপুরের বাসিন্দা কৌশল্যা মণ্ডল বলেন, ‘‘যেভাবে কাজ হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। বার বার একই জায়গা ভাঙছে।’’


আগেও একই জায়গায় ফাটল ধরে বলে অভিযোগ


ফাটল ধরার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা। শুরু হয় বাঁধ মেরামতির কাজ। বেলাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শিখা প্রামাণিক বলেন, ‘‘এর আগেও ভাঙন দেখা গিয়েছে। নদীতে ড্রেজিং না হওয়ায় এই সমস্যা। বড় জাহাজ গেলে তার স্রোতে ক্ষতি হচ্ছে পাড়ের।’’ এই মুহূর্তে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের তত্ত্বাবধানে মেরামতির কাজ চলছে। ভয়ের কারণ নেই বলে সকলকে আশ্বস্ত করেছে প্রশাসন। কিন্তু কিছুদিন পরই ষাঁড়াষাঁড়ির বান আসবে, তখন কী অবস্থা হবে, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে শ্যামপুরের কয়েকহাজার বাসিন্দার।