সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: জন্ম থেকেই যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তা নয়। ছোট থেকে চনমনেই ছিলেন, খেলাধুলো-পড়াশুনো এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ছিল সবেতেই। কিন্তু বাধ সেধেছে রোগ। এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিকূলতা এসেছে বারংবার। তবে সেই বাধা পেরিয়েই এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় (HS Examination) বসলেন শাহিনা খাতুন (Shahina Khatun)।


অনেকদিন যাবৎই চোখে কম দেখছিলেন শাহিনা। ডান চোখে প্রথমে কম দেখছিলেন, এরপর ধীরে ধীরে বাঁ চোখেও দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। কী কারণে এই সমস্যা, তা অবশ্য নির্ধারণ করতে পারেননি কোনও চিকিৎসক। তবে বলা হয়েছিল হয়তো ১১ বছরের শিশুটির মস্তিষ্কে বাসা বেধেছে ব্রেন টিউমারের মতো রোগ। একদিন অন্তর মাথা যন্ত্রণায় ছটছট করতে থাকে মেয়েটি। কলকাতার হাসপাতালে রোগ নির্ণয় হলেও সঠিক চিকিৎসা এখনই শুরু করা যায়নি।                                       


শাহিনার মা বলেন, আমার মেয়ে পরীক্ষা দেবেই এই জেদ নিয়ে রেখেছে। হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা চন্ডীতলা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রকৃতি-এর চেয়ারম্যান সুবীর মুখোপাধ্যায় এগিয়ে এসেছে দাঁড়িয়েছেন এই মেয়েটি এবং পরিবারের পাশে। পরীক্ষা শেষ করেই যাতে বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করতে যেতে পারেন শাহিনা, সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন তিনি।   


আরও পড়ুন, মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল বিষ্ণু মূর্তি! 'ভগবানের' দর্শন পেতে নদিয়ায় ছুটে আসছেন ভক্তরা


  
কুমিরমোড়া RKN হাই স্কুলের ছাত্রী শাহিনা খাতুনের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে জনাই ট্রেনিং হাই স্কুলে। যেহেতু দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে তাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাইটার নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে সে। গত দশ বছর ধরে সাহিনার পরিবারের পাশে রয়েছে চন্ডীতলা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শাহিনার পড়াশুনোর প্রতি আগ্রহ দেখেই এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। 


আজ থেকে শুরু হয়েছে এবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার পরীক্ষায় বসছে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, বেশ কিছু কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতর কেন্দ্রে থাকবে মেটাল ডিটেক্টর। এবং অতি স্পর্শকাতর কেন্দ্রে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর।     


উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, পরীক্ষা চলবে সকাল ১০ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা নেওয়া হবে মোট ২ হাজার ৩৪৯টি কেন্দ্রে। অন্যান্য বারের মতো এবারও পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যবস্থা করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা। মোবাইল বা কোনও রকম যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতে কোনও পরীক্ষার্থী ঢুকে পড়তে না পারে, তার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।