সমীরণ পাল, উত্তর চব্বিশ পরগণা : আদালতের নির্দেশে বরখাস্ত হওয়া গ্রুপ সি  ( Group C ) কর্মীদের তালিকায় বহু তৃণমূল নেতা ( TMC )  যেমন আছেন, তেমনই শাসক দলের নেতা কর্মীদের আত্মীয়রাও রয়েছেন। মন্ত্রীর ভাই থেকে বিধায়কদের পুত্র-কন্যারা, কে নেই সেই তালিকায়। তেমনই একজন  মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর হাই স্কুলের স্বর্ণালী মণ্ডল। স্কুলে ক্লার্কের চাকরি করতেন তিনি।  হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে স্বর্ণালীর।


কে এই স্বর্ণালী?
খোঁজ নিয়ে দেখা গেল , তাঁর স্বামী স্বরূপনগরের বাসিন্দা নিরুপম গাইন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন  নেতা ।  স্ত্রীর চাকরি যাওয়ার পরও তাঁর মনোবল তুঙ্গে। বলছেন, কোর্টের উপর তাদের আস্থা আছে । তারপরে আইন যে পথে চলবে সেভাবেই তিনি চলবেন।  এর বেশি আর কথা বাড়াননি ওই ালির স্বামী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা । 


স্বর্ণালীর তৃণমূল যোগ


কেউ তৃণমূল সরকারের মন্ত্রীর ভাই, কেউ তৃণমূল বিধায়কের ছেলে, কেউ তৃণমূল বিধায়কের মেয়ে, কেউ তৃণমূলের কাউন্সিলর। কেউ আবার প্রাক্তন বিধায়ক ও বর্তমানে বিজেপি নেতার মেয়ে। ক্রমেই লম্বা হচ্ছে তালিকা! গ্রুপ সি-র নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, যে অযোগ্যদের চাকরি গেছে, তাঁদের মধ্য়ে কয়েকজনের সঙ্গে তৃণমূলের সরাসরি যোগ রয়েছে!


 'বাপের বাড়ি CPM'


স্বামী ঘাসফুল শিবিরের অনুগামী হলেও, স্বর্ণালীর বাপের বাড়ি বামমনস্ক বলেই পরিচিত। স্বরূপনগর গোবিন্দ পুর পঞ্চায়েতের পূর্ব পলতা গ্রামের বাসিন্দা স্বর্ণালির মা বাসন্তী জানান মেয়ে পড়াশোনা করেই এসএসসি ( SSC ) পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছে। স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দুলাল চন্দ্র ভট্টাচার্য জানালেন স্বর্ণালীর বাপের বাড়ির পরিবার সিপিএম করে। 


স্বর্ণালীর বাবা বিশ্বনাথ  মণ্ডল দীর্ঘদিন গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য ছিলেন। বেশ দাপট ছিল বলেই স্থানীয়দের দাবি। তবে এই চাকরির পেছনে রাজনীতির বা তৃণমূলের হাত আছে এমন অভিযোগকে স্রেফ অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান স্বর্ণালী ছাত্রী হিসেবেও খারাপ ছিল না ।


রাজবল্লভপুর স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি হীরু মজুমদার জানান , স্কুলের কাজকর্মে  স্বর্ণালীর গাফিলতি ছিল না। কাজকর্ম ভালোই করতেন।  তবে কোর্টের নির্দেশের বাইরে তাঁরা নয় !  হাইকোর্ট যেভাবে নির্দেশ দেবে তা স্কুল পরিচালন কমিটি মেনে চলবে।


সব মিলিয়ে স্বর্ণালী চাকরি যাওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে মসলন্দপুর রাজবল্লভপুর স্কুলেও। 

স্বর্ণালী ও স্বর্ণালীর মতো চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ এখন কি হয়, তা ঠিক করবে আদালতই ।