কলকাতা: সোমবার নতুন দলের নামব ঘোষণা করতে চলেছেন হুমায়ুন কবীর। আর তার আগেই দলীয় প্রতীক, দলের নাম নিয়ে বেশ কিছু তথ্য খোলসা করলেন তিনি। তাঁর দলের নামে চমক থাকবে বলেও জানিয়েছেন। আর দল ঘোষণা আগেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় হুমায়ুনের নামে পোস্টার, ফ্লেক্স দেখা গেল। (Humayun Kabir New Party)
রাত পোহালেই দলঘোষণা। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। সেই আবহে এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে হুমায়ুন বলেন, "অনেক আগেই ঘোষণা করেছিলাম যে ২২ ডিসেম্বর, সোমবার দলঘোষণা হবে। আমি সোমবার ভোরবেলা ভূমিষ্ঠ হয়েছিলাম, তাই সোমবারকেই বেছে নিয়েছি।" (Humayun Kabir News)
তৃণমূলের থেকে কোনও প্রস্তাব এলে কি পিছু হটবেন হুমায়ুন? তাঁর জবাব, "প্রশ্নই ওঠে না। আজকের দিনে এসব প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক। ১৩৫ বলেছিলাম, কমপক্ষে ১৮২ আসন থাকবে। প্রয়োজনে ২৯৪টি আসনেই লড়ব।" দলে কি শুধুমাত্র মুসলিমরাই জায়গা পাবেন? হুমায়ুন জানিয়েছেন, দলের স্টেট কমিটি হবে, তাতে অন্তত ২০ শতাংশ হিন্দু নেতা থাকবেন।
কিন্তু নতুন দলের নাম কী রাখবেন হুমায়ুন? রহস্য জিইয়ে রেখে হুমায়ুন বলেন, "আগামী কাল বেলা ১টায় জানতে পারবেন। বাংলার জনতার পার্টি হবে, আম জনতার উন্নয়নের পার্টি হবে। শর্ট ফর্ম এবং লোগো কাল দেখবেন। যেমন TMC আছে, তিনিট অক্ষরেই দল আসবে। প্রতীকী চিহ্ন কী হবে, বাংলার মানুষ আছেন। নির্বাচন কমিশন তো এত তাড়াতাড়ি দেবে না! তবে টেবিল আমার পয়া। আর টেবিল না পেলে জোড়া গোলাপফুল নিয়ে লড়ব। পদ্মফুল, ঘাসফুলের পাশা কাঁটাওয়ালা ফুল, গোলাপ। মানুষ কোন ফুল বেছে নেন, তা আগামীতে বোঝা যাবে।"
দলের নামে তৃণমূল বা কংগ্রেস, কোনওটাই থাকবে না বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। তবে পতাকার রং জাতীয় রংয়ের কাছাকাছি হবে, তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মতোই পতাকা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আর হুমায়ুন যখন দলঘোষণার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, সেই সময় বিভিন্ন জায়গায়, তাঁর ছবিও নাম দিয়ে পোস্টার, ফ্লেক্স চোখে পড়ছে মুর্শিদাবাদে। ১২ নং জাতীয় সড়কের পাশে যে ফ্লেক্স চোখে পড়ে, তাতে লেখা ছিল, ‘বাংলার জনসাধারণের স্বার্থে নতুন দলের সূচনা হতে যাচ্ছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর দলে দলে যোগদান করুন’।
বেশ কিছু দিন ধরেই তৃণমূলে বেসুরো বাজছিলেন হুমায়ুন। কিন্তু মতবিরোধ বাড়তে বাড়তে সম্প্রতি চরমে পৌঁছয় 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণ ঘিরে। অযোধ্যায় ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের অনুকরণে মুর্শিদাবাদে মসজিদ গড়ার কথা জানান তিনি। আর তাতেই তাঁর প্রতি রুষ্ট হয় তৃণমূল। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় দল থেকে। এর পরই নিজের দলঘোষণার কথা জানান তিনি। তবে তৃণমূলের টিকিটে জেতা ভরতপুরের বিধায়ক পদটি এখনও ছাড়েননি হুমায়ুন। আর তাতেই তৃণমূলের তরফে আঙুল তোলা হচ্ছে তাঁর দিকে। তিনি বিজেপি-র মদতে সংখ্যালঘু ভোট কাটতে নেমেছেন বলে উঠছে অভিযোগ।
যদিও হুমায়ুন বলছেন, "মুর্শিদাবাদের একটা ইতিহাস আছে। বাংলা, বিহার, ওড়িশা পরিচালিত হত এখান থেকে। সেখান থেকে আগামী দিনে নতুন ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। মানুষের বাউন্সার থাকবে। মুর্শিদাবাদ-সহ বাংলার অবহেলিত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, শাসকদলের কাছে অবজ্ঞা পাওয়া মানুষের উপস্থিতি থাকবে কাল। বাংলার রাজনীতিতে কোনও রাজনৈতিক দল যে সভা বা ভিড় করে দেখাতে পারেনি, কাল দেখতে পাবেন। এটাই আমার বাউন্সার, এটাই আমার চমক।"
অন্য দিকে, রেজিনগরে প্রস্তাবিত মসজিদের কাছে ইতিমধ্যেই ইঁট বিক্রি শুরু হয়েছে। দোকান বসেছে ইঁটের। ১০ টাকায় ইঁট বলে মাইকে প্রচার হচ্ছে। হুমায়ুনের প্রস্তাবিত মসজিদের জন্য বহু দূর থেকে ইঁট নিয়ে আসছেন অনেকেই। তবে এবার একেবারে প্রস্তাবিত মসজিদের কাছেই ইঁট বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেকেই সেখান থেকে ইঁট কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বলে খবর। বালি, পাথরও অনেকে নিয়ে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। এমন একাধিক দোকান তৈরি হয়েছে এলাকায়।