জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কালই শেষ হচ্ছে গভীর সমুদ্রে মাছ (Deep Sea Fishing) ধরতে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা। আর বুধবার থেকে ইলিশের (Hilsa) খোঁজে সমুদ্রে পাড়ি দিতে তৈরি কয়েকশো ট্রলার। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। গত ৩ বছরে সেরকম ভাল ইলিশ মেলেনি। এবার কি শিকে ছিঁড়বে? আশাবাদী মত্স্যজীবী থেকে ট্রলার মালিকরা।
দমবন্ধকর ও ভ্যাপসা গরমে ঝিরঝিরে বৃষ্টি বা ইলিশ মাছ, কষ্টকল্পিত হলেও সামনেই আসতে চলছে খুশির খবর। একদিকে আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকছে বর্ষা (Monsoon)। অন্যদিকে, ইলিশ ধরতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন মত্স্যজীবীরা।
প্রস্তুতি পর্ব
রঙের পোচ পড়ছে ট্রলার গুলিতে। চলছে জাল বোনার কাজ। প্রজননের কারণে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মত্স্য দফতর। মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে সেই সময়সীমা। বুধবার থেকেই গভীর সমুদ্রে ইলিশের আশায় পাড়ি দেবে দাঁড়িয়ে থাকা এই শয়ে শয়ে ট্রলার। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর, ফ্রেজারগঞ্জ, পাথরপ্রতিমা ও রায়দিঘিতে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা।
আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে মোহনার দিকে ছুটে আসে ইলিশের ঝাঁক। ঝিরঝিরে বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, ইলিশ ধরার আদর্শ পরিবেশ! কিন্তু গত ৩ বছরে তেমন ইলিশ মেলেনি! উল্টে জ্বালানি থেকে খরচ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় রয়েছেন মত্স্যজীবী থেকে ট্রলার মালিকরা।
আরও পড়ুন, মাঝনদীতে হঠাৎ উল্টে গেল ট্রলার, উদ্ধার ১৫ মৎস্যজীবী
কী জানাচ্ছেন মৎসজীবীরা?
মত্স্যজীবী শ্রীকৃষ্ণ দাস বলেন, "বিগত ৩ বছর ধরে তেমনভাবে ইলিশ পাইনি আমরা। ইলিশ না পাওয়ার জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এবছর আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। আমরা মনে করছি এবছর ভালো মাছ পাবো।" ট্রলার মালিক বিশ্বনাথ দাস বলেন, "যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, বহু ট্রলার মালিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মরশুমের এক একটি ইলিশ মাছ ধরার অভিযানে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য খরচ সহ প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচা হয়। সেই অনুপাতে মৎস্যজীবীরা তেমন মাছ পায়নি গত কয়েক বছর ধরে।"
অন্যদিকে, মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ মৎস্য আধিকারিক জয়ন্ত প্রধান বলেন, "মৎস্যজীবীরা যে জাল দিয়ে ইলিশ ধরবে সেই জালের ফাঁস ৯০ মিলিমিটার হতে হবে। এছাড়াও ২৩ সেন্টিমিটারের থেকে ছোট মাছ ধরা যাবে না। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার মৎস্যজীবীদের পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, লাইভ বুয়া, লক বুক, জিপিআরএস ডিভাইস নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক।"