কলকাতা: ‘ভাবছে আমি মাথা নত করব, আমি অন্য মেটিরিয়াল। মানুষের কাছ ছাড়া অন্য কিছুর সামনে আমি মাথা নত করব না। তদন্তকারীদের আমি দোষ দিই না, তদন্তকারী সংস্থা তাদের কাজ করছে, আমি সহযোগিতা করেছি।’ টানা সাড়ে ৮ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডির (ED) দফতর থেকে বেরিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Tmc Abhishek Banerjee)।  


কয়লা পাচারকাণ্ডে (Coal Smuggling Case)র তদন্তে আজ ইডির দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যা (Abhishek Banerjee)। ইডি-র নজরে ছিল তাঁর দুটি বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তাদের অভিযোগ, এই দুটি অ্যাকাউন্টে কয়লা পাচারের টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। ইডি-র (Enforcement Directorate) দাবি, গত ৬ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। এর পাশাপাশি, গত ৬ মাসে কয়লাকাণ্ডের তদন্তে আরও কিছু নতুন তথ্য ও প্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেগুলিকে সামনে রেখে আজ প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।


এদিন দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, ‘সেপ্টেম্বরেও আমাকে ৯ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল। আজও সাড়ে ৮ ঘণ্টা ধরে প্রশ্ন করেছে, ব্যাখ্যা চেয়েছে। আমার কাছে কিছু কাগজ চেয়েছে, বলেছি দিয়ে দেব।’


এর পরেই বিরোধীদের কটাক্ষ করে অভিষেকের মন্তব্য, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশে ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তদন্তকারীদের আমি দোষ দিই না। যাদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ, প্রমাণ আছে, তাদের ক’বার ডাকছে। সারদা, রোজভ্যালিতে যাদের নাম আছে, তাদের ক’বার ডেকেছে। আমি বিরোধী দল তৃণমূল করি বলে আমি চোর, বাকিরা সাধু!’


বিজেপির নাম নিয়ে এদিন কার্যত সুর চড়িয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘বিজেপিতে এলেই ওয়াশিং মেশিন, ধাপ্পাবাজি বেশিদিন চলতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টে আগামী দিনে আমার করা মামলার শুনানি হবে। ওরা যত করবে, আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, মাথা নত করব না। আসুন গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করুন, আমরা মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার লোক। আমাদের লুকোনোর কিছু নেই, ১০ কিমি দূরেই ইডি অফিস। তাও ১৫০০ কিমি দূরে হেনস্থা করার জন্য দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে। আমি ইমোশনাল নই, আমি বাস্তববাদী।’


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee : 'বাড়িতে ছোট বাচ্চা', কাল ইডির দফতরে হাজিরা দিচ্ছেন না রুজিরা, জানালেন অভিষেক


 এর আগে অভিষেক ও রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন। ইডি বারবার দিল্লিতে তলব করায়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক ও রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সম্প্রতি, সেই আবেদন খারিজ করে আদালত। এর পরই ফের দিল্লিতে হাজিরা দেওয়ার জন্য সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠায় ইডি।