পার্থপ্রতিম ঘোষ, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : কসবার আইন কলেজের পর এবার IIM জোকার ক্যাম্পাস। একমাসের মধ্যে ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল।বাইরে থেকে আসা তরুণীকে বয়েজ হস্টেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে বেহুঁশ করে ধর্ষণের অভিযোগে দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় দানা বাঁধছে অনেকগুলি প্রশ্ন।
নির্যাতিতা বয়ানে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তাঁর পূর্ব পরিচিত। তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হবে বলে আলোচনা করার জন্য শুক্রবার তাঁকে ক্যাম্পাসে ডাকেন দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া । শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার সময় জোকার IIM-এ যান ওই তরুণী। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতার অভিযোগ, তাঁকে বয়েজ হস্টেলে নিজের রুমে নিয়ে যান ওই ছাত্র। ঢোকার সময় হস্টেলের ভিজিটর্স বুকে তাঁকে সইও করতে দেননি অভিযুক্ত। তরুণীকে পিৎজা ও পানীয় দেওয়া হয়। তাতেই কিছুটা সম্বিত হারিয়ে ফেলেন তরুণী। এরপর নির্যাতন শুরু হয় বলে তরুণীর অভিযোগ। বাধা দিলে তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এরপর তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। বয়ানে নির্যাতিতার দাবি, জ্ঞান ফিরলে দেখেন তিনি অভিযুক্তের হস্টেল রুমে পড়ে আছেন। নির্যাতিতা হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এখন এই ঘটনায় যে প্রশ্নগুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে , সেগুলি হল - প্রশ্ন উঠছে, ভিজিটর্স বুকে এন্ট্রি ছাড়াই কীভাবে বয়েজ হস্টেলে ঢুকলেন তরুণী? হস্টেলে ধর্ষণের অভিযোগ, কোথায় ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা? ধর্ষণে একজন জড়িত, নাকি জড়িত একাধিক ব্যক্তি? ঘটনার সময় হস্টেলে কেউ ছিলেন না? জোকা IIM-এ ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। এদিকে IIM জোকার রাঁধুনি শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সেখানে ঢুকতে গেলে প্রথমে নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে কথা বলে কারণ জানিয়ে সই করতে হয় ভিজিটর্স বুকে। এরপর হস্টেলে ঢুকতে গেলে আরেকবার ভিজিটর্স বুকে সই করতে হয়। নিরাপত্তার বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোনোর পর মেলে প্রবেশাধিকার। তাহলে কীভাবে এই নিয়ম এড়িয়ে হস্টেলে ঢুকে পড়লেন তরুণী?
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি, IIM জোকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছে তারা। এরপরই গ্রেফতার করা হয় দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াকে। ধৃতের বিরুদ্ধে BNS-এর ১২৩ নম্বর ধারা অর্থাৎ অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে কোনও কিছু খাইয়ে আচ্ছন্ন করা এবং BNS-এর ৬৪ নম্বর ধারা অর্থাৎ ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে।
জোকা IIM-এর ডিরেক্টর শৈবাল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছে। পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।