ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম : বছর ঘুরে আবার আসছে উমা। নিময় মেনে হবে পুজো। হবে চণ্ডীপাঠ। কিন্তু যাঁর চণ্ডীপাঠের জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন সবাই, বাড়ির সেই মানুষটাই নেই। ৩ বছর আগে সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন বাড়ির ছেলে। প্রণব মুখোপাধ্যায় ( Pranab Mukherjee ) । দেশের একমাত্র বাঙালি রাষ্ট্রপতি।
২০২০-র ৩১ অগাস্ট প্রয়াত হয়েছেন তিনি। গত কয়েকবারের মতো এ বছরও তাঁকে ছাড়াই পুজো হচ্ছে বীরভূমের মিরিটির মুখার্জি ভবনে।
জৌলুসহীন মুখার্জি বাড়ির পুজো
বীরভূমের ( Birbhum ) কীর্ণাহারের মিরিটি ( Miriti ) গ্রামে বাড়ি। পুজোর ৪ দিন বরাবর গ্রামের বাড়িতেই কাটাতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। নিষ্ঠার সঙ্গে পরিপাটি করে পুজোর আয়োজন সারতেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। নিরাপত্তার কড়াকড়ি, ভিভিআইপিদের আনাগোনা। এক সময়ে পুজোর সময় গম গম করত কীর্নাহারের মিরিটির এই বাড়ি। তাঁর প্রয়াণের পর দুর্গাপুজো হলেও আগের মতো জৌলুস আর নেই।
বাড়ির ভিতরেই দুর্গা মন্দির, যেখানে দুর্গাপুজো হয়। খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও কখনও শিকড়কে ভোলেননি প্রণব মুখোপাধ্যায় । রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও, পুজোয় চলে আসতেন গ্রামের বাড়িতে। করতেন অষ্টমীর চণ্ডীপাঠ। প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের প্রয়াণের পর, বাবার অনুপস্থিতিতে পুজোর গুরু দায়িত্ব পালন করছেন ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
পুজোর কটা দিন পল্টু থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায় হয়ে ওঠা মানুষটার অনুপস্থিতিও মেনে নিতে পারেন না মিরিটির বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডল বলছেন, ' পুজো যেমন হয় সেইরকম হচ্ছে। তবে আগে কাকাবাবু থাকতে যে ধরনের ধুমধাম হত। প্রচুর লোকজন, পুলিশ প্রশাসন, বহু দূর থেকে যে লোকজন দেখতে পেতাম খুব আনন্দ উপভোগ করতাম। পুজো যেমন তেমনই আছে। ধুমধাম কমে গেছে। লোকজনের যাতায়াত কম হয়ে গেছে।'
স্থানীয় বাসিন্দা কালো মণ্ডল জানান, ' পুজো আগের মতো সবই হয়। আগে আমরা ঢুকতে পারতাম না। এখন ঢুকতে পারি। পুলিশ প্রশাসন প্রচুর আসত।'
১৮৯৬ সালে, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঠাকুরদা তারকনাথ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে মুখার্জী ভবনে দুর্গাপুজো শুরু হয়। একটা সময় নিজের কাঁধেই এই পুজো দায়িত্ব তুলে নেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। বংশ পরম্পরায় উমা বন্দনা চলে আসছে। এবছর ১২৮ বছরে পা দিল এই পুজো।