কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর ওপর হামলার নিন্দায় সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কোনও জনপ্রতিনিধিকে এইভাবে মারা অন্যায় বলে সরাসরি মুখ খুলেছেন বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদ।মঙ্গলবার খগেন মুর্মুকে দেখতে গিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, গুরুতর আঘাত নেই। তার চব্বিশ ঘণ্টা পর তাঁর দলের সাংসদ সৌগত রায় বললেন, এত সিরিয়াসলি মারা খুব খারাপ।
খগেন মুর্মু তো আর রাউডি নয়, তাহলে মারবে কেন? প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়।দুর্যোগ বিপর্যস্ত নাগরাকাটায় ত্রাণ দিতে গিয়ে মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য।এখনও ICU-তে ভর্তি তিনি।যদিও, মুখ্য়মন্ত্রীর দাবি, গুরুতর আঘাত নেই।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ওঁর কানে চোট আছে। কিন্তু উনি ডায়বেটিসের পেসেন্ট। তাই পর্যবেক্ষণে আছেন। একটি কেবিনে আছেন, যাকে ICCU বলে। আর এই আবহেই কার্যত দলের উল্টো পথে হেঁটে বিজেপি সাংসদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়।
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, কাউকে মারাই অন্যায়, তাঁর উপর তিনি (খগেন মুর্মু) যদি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হন, তাঁকে (খগেন মুর্মু) মারা এবং এত সিরিয়াসলি মারা খুব খারাপ। খুব খারাপ বার্তা পৌঁছয়। জখম বিজেপি সাংসদকে দেখতে হাসপাতালে গেলেও, ঘুরিয়ে বিজেপির জনপ্রিতনিধিদের দিকেও আঙুল তুলেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, যদি কোনও বিপর্যয় হয়, সঙ্গে সঙ্গে VIP-দের ৩০-৪০টি গাড়ি নিয়ে যাওয়া, কোনও একজন নয়, ৪-৫ জনের, ৭-৮ জনের জনের ৩০-৪০টি গাড়ির কনভয় নিয়ে যাওয়া কি ঠিক? ঠিক হয় কি? এবং পুলিশকে কোনওকিছু না জানিয়ে।' কিন্তু যখন এদের ঘর চলে যায়, জমি চলে যায়, রাস্তা ভেঙে যায়, ব্রিজ ভেঙে পড়ে, ঘরে খাবার-জল কিছু থাকে না তখন মানুষের রাগ হয়।
এক্ষেত্রেও কিছুটা হলেও উল্টো সুর সৌগত রায়ের গলায়।তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন যাচ্ছে সেই সময় অনেক গাড়ি নিয়ে ওই প্রভাবিত অঞ্চলে যাওয়াটা বোকামি হয়েছে। ভুল হয়েছে বলে মার খাবেন এটা কোনও যুক্তি নয়। কিন্তু ভুল হয়েছে। এর আগে তৃণমূলের আরেক বর্ষীয়ান সাংদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ও এই ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা করেছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে কারও ওপর হামলা করা বা আক্রমণ করা, এগুলো রাজনীতিতে যত কম হয় তত মঙ্গল, না হলে সব চাইতে ভাল। আমি এগুলোকে কখনই সমর্থন করি না। বিরোধী দলের হলেও করি না। বাংলার বিরোধীদের ওপর আক্রমণ নতুন কিছু নয়।কিন্তু মূল প্রশ্ন হল, এই আধিপত্য়ের রাজনীতির সংসকৃতি বন্ধ কবে হবে?