বাচ্চু দাস, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, রঞ্জিৎ হালদার, কলকাতা: বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনেই জয়ের লক্ষে দলকে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী (TMC)। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল আর কংগ্রেসের মধ্যে কি জোট হবে? না কি বাংলার ৪২টি আসনে একাই লড়বে তৃণমূল?
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) আর বেশি বাকি নেই! কিন্তু, বাংলায় কি বিজেপি বিরোধী 'INDIA' জোটের শরিকদের মধ্যে আসন সমঝোতা হবে? তৃণমূল আর কংগ্রেসের মধ্যে কি জোট হবে? কংগ্রেসের দাবি মেনে, তৃণমূল ২টির বেশি আসন কি ছাড়বে? না কি বাংলার ৪২টি আসনে একাই লড়বে তৃণমূল? রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা বাংলায় ঢোকার আগে এই প্রশ্নটা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। সূত্রের খবর, শুক্রবার মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে লোকসভার প্রস্তুতি বৈঠকে, বাংলার ৪২ লোকসভা আসনেই জয়ের লক্ষে দলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এও বলেছেন, মুর্শিদাবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলে, ৩টি আসনেই জয় সম্ভব।
কুণাল ঘোষের বক্তব্য, যেহেতু দেশে 'INDIA' জোট একটা গঠিত হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী, ফলে জোট ধর্ম মেনে, জোটের প্রতি সম্মান দেখিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেস এই বিষয়টা বরদাস্ত করছে, এই জোট আলোচনাটা। তৃণমূল প্রস্তুত থাকছে, সমস্তরকমভাবে সাংগঠনিক প্রস্তুতি রাখছে আর বাকি জোট ধর্ম মেনে, বাস্তব জমির ওপর দাঁড়িয়ে, গ্রাউন্ড রিয়েলিটির ওপর দাঁড়িয়ে, যদি কোনও আলোচনা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক সময়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অধীর চৌধুরী বলছেন, আমি লড়ে জিতেছি। আমি হারিয়ে বড় হয়েছি। আমার কাছে লড়াইটা শেষ কথা। আমি কাউকে পরোয়া করি না। কাউকে পরোয়া করে রাজনীতি করি না। আমি জানি আমাকে লড়তে হবে। লড়ে আমাকে বড় হতে হবে। লড়ে আমাকে জিততে হবে। আমি লড়ে জিতেছি। তৃণমূলকে, বিজেপিকে হারিয়ে লড়ে জিতেছি।
তাহলে কি বাংলায় বিশ বাঁও জলে 'INDIA' জোট? ৪২টি আসনে একাই লড়বে তৃণমূল? উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এমতবস্থায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যে দম লাগে, দুর্নীতিগ্রস্তদের সেই দম থাকে না। থাকা সম্ভব না। স্বাভাবিক কারণেই চর্চা হচ্ছিল যে তাহলে, উনি কি একটু কংগ্রেসের প্রতি নরম? উনি কি একটু বামপন্থীদের ওপর নরম? আমরা তখনও বলেছিলাম, উনি মাঝরাস্তায় ঢুকেছেন, মাঝরাস্তায় কেটে পড়বেন। ওনার কাজ বিজেপিকে সাহায্য করা। উনি ৪২টি আসনের ৪২টিতেই দাঁড়াবেন বলছেন। এমনভাবেই চলবেন, যাতে বিজেপির সুবিধা হয় এবং সেই কারণেই বিজেপির সঙ্গে আসন রফা নিয়ে ওঁর যে আলাপ আলোচনা হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে, উনি চলবেন!
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা কোচবিহার হয়ে বাংলায় প্রবেশ করবে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের বিভিন্ন শরিক দলকে যাত্রায় সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু, বঙ্গ রাজনীতিতে জোরালো প্রশ্ন, তৃণমূল কি রাহুলের ন্যায় যাত্রাকে সংহতি জানিয়ে কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে? এদিনই শিলিগুড়ির একটি হোটেলে, ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার রুট নিয়ে আলোচনায় বসে কংগ্রেস নেতৃত্ব। বৈঠকে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিংয়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।