সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : একের পর এক শহরে ক্রমাগত বেজে চলেছে সাইরেন (Siren)। ঘন ঘন আছড়ে পড়ছে মিসাইল (Missile। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে নিহত-আহতের সারি। ইজরায়েল (Israel) ও গাজার বাতাস জুড়ে খালির বারুদের গন্ধ। যে ছবি টিভির পর্দায় দেখে আতঙ্কে ভয়ে দিন কাটছে উত্তরপাড়ার দুই বাসিন্দার। ছেলে-বৌমা কেমন রয়েছেন, সেই নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি।


সপ্তাহ দুয়েক আগেই ইজরায়েলে ছেলে-বৌমার কাছে গিয়েছিলেন উত্তরপাড়ার (Uttarpara) উদয় শঙ্কর হাজরা ও সোমা হাজরা। তখন সেখানে ছিল না যুদ্ধের কোনও চিহ্ন। ছেলে-বৌমার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের ছুটির মাঝে খানিক সুন্দরভাবে সাজানো ইজরায়েল ঘুরেও দেখে এসেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। প্রসঙ্গত, ইজরায়েলের হাইফা শহরে কর্মসূত্রে থাকেন উত্তরপাড়ার গবেষক দম্পতি সোমোদয় হাজরা ও জয়িতা দত্ত হাজরা। 


গত কয়েকদিন ধরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। অন্য সময়ের মতো এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়। উত্তরপাড়ার গবেষক দম্পতির বেশিরভাগ সময়ই কাটছে বাঙ্কারে। সেখান থেকেই ভিডিও কলে বৃদ্ধ বাবা-মার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা। সাইরেন বাজলেই বাঙ্কারে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ৭২ ঘণ্টার জন্য খাবার, জল নিয়ে থাকার পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে। 


কালীপুজোর আগে বাড়িতে ফেরার কথা উত্তরপাড়ার গবেষক দম্পতির। যদিও তার আগেই দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন তাঁরা। যদিও যতদিন না সেটা হচ্ছে, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠাতেই দিন কাটছে উত্তরপাড়ার হাজরা দম্পতির। 


রাশিয়া-ইউক্রেন রেষারেষির মধ্যে এবার ইজরায়েল-হামাসের মুখোমুখি সংঘাতে রক্তগঙ্গা। সময় যত গড়াচ্ছে ততই ঘোরাল হচ্ছে মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি। হামাস বাহিনীর লাগাতার হামলায় ক্ষতবিক্ষত ইজরায়েল।


পাল্টা গাজায় শরণার্থী শিবিরে নির্বিচারে বোমা বর্ষণের অভিযোগ উঠল ইজরায়েলের বায়ুসেনার বিরুদ্ধে। দু'পক্ষের সংঘর্ষে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সূত্রের খবর, প্রায় ১৬০০ মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষ ইতিমধ্যেই প্রাণ কেড়েছে দেড় হাজার জনের। শতাধিক মানুষকে যুদ্ধবন্দি করার অভিযোগও উঠেছে হামাসের বিরুদ্ধে। 


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, চারদিনের অচলাবস্থা চলাকালীন ইসরায়েলি হামলায় ১৪৩ শিশু ও ১০৫ নারীসহ ৭০৪ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪০০০ এরও বেশি। এছাড়া হামাসের হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ৯০০ মানুষ নিহত ও ২,৬০০ জন আহত হয়েছে।                                                                           


আরও পড়ুন- যুদ্ধের আবহে প্রেমের জয়গান, বিয়ে সেরেই দেশের হয়ে লড়তে চললেন ইজরায়েলের দম্পতি