মগরা: শুক্রবার সকাল থেকে হুগলি (Hooghly) জেলার মগরা (Mogra) ও বাঁশবেড়িয়ার (Bansberia) বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে আয়কর হানা (IT Raid)। একাধিক ব্যবসায়ীর অফিস ও বাড়িতে একযোগে তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে আচমকা মগরা ও বাঁশবেড়িয়ার পরিচিত ব্যবসায়ী কমল দাস, বৈদ্যনাথ সাহা (বৈদ্য), সতরঞ্জন শীল (সোনা), দিলপ্রীত সিং ও অভিজিৎ ঘটক (টিঙ্কু) সহ একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিসে হানা দেয় আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। একদম সকাল থেকেই শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। আয়কর আধিকারিকদের সঙ্গে এই অভিযানে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিন সিআরপিএফের জওয়ানরাও। তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি লাগাতার জেরা করা হচ্ছে ওই ব্যবসায়ীদের।


সূত্রের খবর, মগরা ও বাঁশবেড়িয়ার যে সমস্ত ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালানো হচ্ছে তারা সবাই রাজ্যের শাসকদল ঘনিষ্ঠ। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে আগামী ২০ তারিখ ভোটগ্রহণ। তার ঠিক কয়েকদিন আগে এই তল্লাশির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ওই দুটি এলাকায়।


প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় মগরার তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তৃণমূলকে টাকা দেওয়া এই সব ব্যবসায়ীরা দূর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ ছিল তাঁর।


আর আয়কর হানা নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় আজ বলেন,"পশ্চিমবঙ্গে সিন্ডিকেট তোলাবাজি চলছে। যারা এসব করছে তাদের ছাড়া হবে না। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, না খাওঙ্গা না খানে দুঙ্গা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। দুর্নীতি-গুন্ডাগিরি আর মাফিয়ারাজ চলছে তার শেষ দেখতে চাই। দুর্নীতি করলে কেউ ছাড় পাবে না।"


অন্যদিকে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি কেন চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতা স্নেহাশিস চক্রবর্তী।


স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, কমল দাস ও বৈদ্য এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি রেখেছে তাই কেউ তাদের ভয়ে মুখ খোলে না। এর আগে দুজনের বিরুদ্ধেই একাধিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। কয়েকবার নাকি জেলও খাটতে হয়েছে তার জন্য।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৬ এপ্রিল রাত আটটা নাগাদ আচমকা মগরা পশ্চিমের শেখ পাড়ার এক বাসিন্দা পবন ঘোষের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। রাত ১২টা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে কম্পিউটার সহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যান তাঁরা। যদিও কী কারণে এই তল্লাশি চালানো হয় তা জানা যায়নি। স্থানীয় এলাকার লোকেদের কাছ থেকে জানা যায়, ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রথমে কয়েকবার টহল দিয়ে যায় পুলিশ। পরে আটটা নাগাদ চারটি গাড়ি করে পবন ঘোষের বাড়িতে আসেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিআরপিএফের জওয়ানরাও।


শেখ পাড়ার বাসিন্দারা জানান, পবন ঘোষ কুন্তিঘাটের কেশরাম রেয়ন কারখানায় ইলেকট্রিক্যাল বিভাগে কাজ করতেন। আগে তাঁর বাড়ি ছিল বর্ধমানের গলসিতে। ১৫ বছর আগে মগরার শেখ পাড়ায় এসে বসবাস করতে শুরু করেন। এলাকায় তাঁদের অনেক জমিও আছে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: 


আরও পড়ুন: