কলকাতা: তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠনের বৈঠক চলাকালীন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলকালাম। ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় SFI। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ভাঙল মন্ত্রীর গাড়ির কাচ, লুকিং গ্লাস। বনেটে ছোড়া হয় জুতো। রণক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত হন শিক্ষামন্ত্রী। SSKM-এ চিকিৎসা করা হয়।


যাদবপুরে ধুন্ধুমার। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আন্দোলনরত বামপন্থী পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দিলেন পড়ুয়ারা। চালানো হল ভাঙচুর। দেওয়া হল গো ব্যাক স্লোগান। গণ্ডগোলের মাঝে ঝড়ল রক্তও। তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে শনিবার এভাবেই রণক্ষেত্র হয়ে উঠল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, "আমার গাড়ি ভেঙেছে। আমার নিরাপত্তারক্ষীকে মারা হয়েছে। বারবার উপাচার্য বলেছিলেন ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকতে আমি ডাকতে চাইনি।''

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এদিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে ছিল উত্তেজনা। দফায় দফায় স্লোগান দিচ্ছিলেন এসএফআই-এর সদস্যরা। এরপরই তৃণমূলের অধ্য়াপক সংগঠন ওয়েবকুপা ও টিএমসিপি সদস্যদের সঙ্গে তুমুল অশান্তি শুরু হয় এসএফআই-এর সদস্যদের। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এদিন ওয়েবকুপার সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল শিক্ষামন্ত্রীর। কিন্তু গণ্ডগোলের জেরে অন্য গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন তিনি। ওপেন এয়ার থিয়েটারে ব্রাত্য বসুর বক্তৃতা শুরু হওয়ার পর, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। ব্যানার নিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারের সামনে কার্নিশে উঠে পড়েন ২ আন্দোলনকারী। ২ নম্বর গেটের সামনে তৈরি হয় ধুন্ধুমার পরিস্থিতির। ছোড়া হয় চেয়ার, বোতল। হেনস্থার মুখে পড়তে হয় অধ্যাপকদেরকেও। এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "বাতিল, হেরে যাওয়া, সারা পৃথিবীতে পরিত্যক্ত একটি পতাকা, ছিন্ন পতাকা, সেটা তুলে নিয়ে এসে এখানে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে চাইছে। এর থেকে হাস্যকর কিছু হতে পারে না।''

সভা থেকে শিক্ষামন্ত্রীর বেরনোর সময় তৈরি হয় নাটকীয় পরিস্থিতি। বিক্ষোভের জেরে, দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই উঠতে পারেননি ব্রাত্য বসু। এরপর কোনওক্রমে তিনি গাড়িতে গিয়ে উঠলেও, গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভকারীরা। গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন পড়়ুয়ারা। বনেটের ওপর চাপড় মারা হয়। এমনকী ছুড়ে মারা হয় জুতোও। কোনওক্রমে গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী। গাড়ি নিয়ে সোজা চলে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, "শারীরিকভাবে ঠিক আছি। আমার অনেক প্রফেসররা শারীরিকভাবে সত্যিই আহত হয়েছেন। প্রচুর প্রফেসরকে আজকে মারা হয়েছে।'' এই গণ্ডগোলের মাঝেই ঘটে রক্তারক্তিকাণ্ড। মাথা ফেটে যায় এক বিক্ষোভকারীর। তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে।


আরও পড়ুন: Malda News: বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, মালদা মেডিক্যাল কলেজে ধুন্ধুমার