কলকাতা: WBCUPA-SFI সংঘর্ষে গতকাল রণক্ষেত্রের আকার নেয় যাদবপুর। ঘটনায় আক্রান্ত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় জখম হন আন্দোলনকারী ছাত্র । রাতে ফের আগুন জ্বলে ক্যাম্পাসে। বিজেপি শাসিত রাজ্য়ের বিশ্ববিদ্যালয় হলে এমন ঘটনা ওরা ঘটাতে পারত ? গতকাল ব্রাত্যর মুখে শোনা গিয়েছিল এই প্রশ্ন। চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতেই যাদবপুরকাণ্ডে একই সুর মেয়র ফিরহাদ হাকিমেরও।
এদিন ফিরহাদ বললেন, 'গুন্ডাবাজি, বিজেপি শাসিত রাজ্যে করতে পারত, যোগীর রাজ্যে করলে হাড়গোড় ভেঙে দিত। কেন গাড়ি আটকাতে গেল, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল ? রাস্তায় ধাক্কা মেরে দাঁড় করিয়ে বলবে আমার সঙ্গে কথা বলুন, এটা কোনও গণতান্ত্রিক উপায় ? গাড়ির সামনে দৌড়তে দৌড়তে পড়ে গেল, মনে হয় গাড়ির কোনও বাম্পার চোখে লেগেছে', যাদবপুরকাণ্ডে আক্রমণ ফিরহাদ হাকিমের।
মূলত, গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস যাদবপুরে যেতে পারবে না ?! তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংগঠন করতে পারবে না ?এটা কী গণতন্ত্র ? আমি আজকে আমার বক্তৃতায় বলেছি যে, ওদের হিম্মত আছে যে বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিজেপি মণ্ডলের অধ্যাপকরা যেখানে আছেন, সেখানে গিয়ে এইভাবে বিজেপি অধ্যাপকদের গায়ে হাত দিতে ? মন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করতে ? ওরা পারবেন ? গোটা রাজ্য দেখেছে, কারা আজকে নৈরাজ্য চালিয়েছে।'
চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতেই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'যাদবপুরে এই ঘটনা নতুন নয়, বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যাদবপুর প্রায় মুক্তাঞ্চলে পরিণত করার চেষ্টা। আমি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছিলাম, চেয়েছিলাম ডেপুটেশন জমা দিক, ওরা দিতে রাজি হল না। ৩০-৪০ জনের একটা গ্যাং ছিল, ওদের চিনি না। এসএফআইয়ের ডেপুটেশন দিয়েছিল, ৪-৫টি অতিবাম কয়েকটি সংগঠন ছিল, তাঁরা বলছিল সবার সঙ্গে একসঙ্গে বসে ডেপুটেশন দিতে হবে, সেটা সম্ভব ছিল না। ওরা শারীরিকভাবে হেনস্থা করতে চাইছিল, টানা অধ্যাপকদের মারধর করেছে। ছাত্র হয়ে অধ্যাপকদের মারছে, এটা দুর্ভাগ্যের।'
আরও পড়ুন, চোখের পাশে ১৪টি সেলাই, কেমন আছেন 'শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় জখম' যাদবপুরের ছাত্র ইন্দ্রানুজ ?
এদিকে, WBCUPA-SFI সংঘর্ষে গতকাল রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল যাদবপুর। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির নীচে পড়ে গিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ইন্দ্রানুজ রায়। অভিযোগ সেই অবস্থাতেই এগিয়ে গিয়েছিল শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি। এরপরেই আহত ওই পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা গিয়েছে, ইন্দ্রানুজ রায়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। চোখের পাশে ১৪টি সেলাই পড়েছে প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজের। সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডে ভর্তি ইন্দ্রানুজ রায়। ইন্দ্রানুজের সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক।