কলকাতা: পড়ুয়ার প্রাণের বিনিময়ে টনক নড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ছাত্রমৃত্যুর ১১ দিন পর প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য পৃথক হস্টেলের সিদ্ধান্ত। ক্যাম্পাসের ভিতরেই হস্টেলে রাখা হবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের। এতদিন ওই হস্টেলে থাকছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। কর্মীদের সরিয়ে সেখানেই রাখা হবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির বৈঠকের পর জানালেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। ইউসিজি-র বিধি মেনেই নিরাপত্তা-ব্যবস্থা হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসে নজরদারিতে থাকবে সিসি ক্যামেরা, আরএফআইডি এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। হস্টেলে ঘর বরাদ্দ করার ক্ষেত্রেও মানা হবে ইউজিসি-র বিধি। বৈঠকের পর জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য।
ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে সোমবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছিল রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে। ঘটনার পর কেন ছুটি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন না তিনি? সূত্রের খবর, এনিয়ে প্রশ্ন করা হয় রেজিস্ট্রারকে। এদিকে, যাদবপুরকাণ্ডে এখন পুলিশের স্ক্যানারে এক পড়ুয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।
দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে এক ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে যখন দেশজুড়ে তোলপাড়। ঘটনার ৪ দিন পরে ক্যাম্পাসে এসে চোখের জল ফেলেছিলেন রেজিস্ট্রার। এতো বড় একটা ঘটনার পর ৪ দিন কেটে গেলেও, কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন তিনি। ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে সোমবার, এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির বৈঠকে ডাকা হয় রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে।
কী ঘটেছিল ৯ অগাস্ট ঘটনার রাতে? কী কী দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, বাড়ি ছেড়ে সদ্য ৩দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা এক সাড়ে সতেরো বছরের পড়ুয়াকে? ঘটনার সময় কারা সেখানে উপস্থিত ছিল? তা জানতে, রবিবার হস্টেলের এক আবাসিক ছাত্রের ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৯ অগাস্ট রাতে নদিয়ার পড়ুয়ার সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল তা নিয়ে ওই ছাত্র হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করেছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে কোনও সূত্র পাওয়া যায় কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত, পড়ুয়াকে খুনের অভিযোগে ১২ জন ও পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ১ জন, সবমিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ধৃত জয়দীপ ঘোষকে জেরা করে, পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে, আরও ১১ জনের নাম উঠে এসেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদেরও বয়ান নিতে চায় পুলিশ।