সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। কাটাছেঁড়া চলছে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও। সেই আবহে বুধবার তৃতীয় বারের জন্য বৈঠকে করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুতে গঠিত তদন্ত কমিটি।মেন হস্টেলের সুপার এবং বেশ কয়েকজন প্রাক্তনীকেও ওই বৈঠকে তলব করা হয় (JU Student Death) জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে।  সূত্রের খবর, এখনও প্রায় ১০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি। (Jadavpur University)


যাদবপুরে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের করিডর থেকে পড়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলছে। বার বার প্রশ্ন উঠছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে। সেই আবহেই তৃতীয় বারের জন্য বৈঠকে বসল বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। এদিন অরবিন্দ ভবনে তলব করা হয় মেন হস্টেলের সুপার এবং বেশ কয়েকজন প্রাক্তনীকে।

যাদপুরকাণ্ডে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি চ্যাট ঘিরে রহস্য জোরাল হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, হস্টেলের বারান্দা থেকে ওই পড়ুয়া আছড়ে পড়ার ঘটনাটিকে অন্য ভাবে তুলে ধরতে, জিবি মিটিং ডেকেছিল। অভিযোগ সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হবে না পুলিশকে। কার নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল? ওই জিবি মিটিংয়ে কারা কারা ছিলেন? ঘটনার পর কাদের জানানো হয়েছিল? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়ে থাকলে, কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল কি? সূত্রের খবর, প্রাক্তনীদের থেকে এসব বিষয়েই জানতে চাওয়া হয়।


আরও পড়ুন: Jadavpur University: প্রাক্তনীদের সভা চলাকালীনই রাস্তা অবরোধ, স্লোগান, যাদবপুরে এবিভিপি সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জ পুলিশের

পুলিশ সূত্রে খবর, একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, যাদবপুরের হস্টেলে অন্তত ২০ জন প্রাক্তনী থাকতেন। অভিযোগ, শুধু হস্টেলে থাকাই নয়, প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা কার গেস্ট হিসেবে কোন ঘরে থাকবেন, সেসবও ঠিক করে দিতেন প্রাক্তনীরা। দীর্ঘদিন ধরে হস্টেলে যে অনিয়ম চলছে হস্টেল সুপার কি সে বিষয়ে কিছুই জানতেন না? জানলে কেন এতদিন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? ইউজিসির গাইডলাইনে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, হস্টেল ও ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগানো বাধ্যতামূলক। তা সত্ত্বেও কেন সিসি ক্যামেরা ছিল না?

সূত্রের খবর, হস্টেল সুপারের থেকে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। তবে এদিন অরবিন্দ ভবনের ভিতরে যখন অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির বৈঠক চলছে, সেই সময় প্রশাসনিক ভবনের বাইরে ওঠে স্লোগান। র‍্যাগিং-মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ-অবস্থান করেন এসএফআই সদস্যরা। SFI নেতা অনুষ্টুপ চক্রবর্তী বলেন, "দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। যারা করিয়েছে, মাস্টারমাইন্ড, শাস্তি দিতে হবে তাদের।"


বৃহস্পতিবারের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কমিটিকে তদন্ত শেষের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, এখনও প্রায় ১০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি। সেই কারণে, তদন্ত শেষ করতে আরও সময় চাওয়া হয়েছে।