রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: যাদবপুরকাণ্ডের জের জলপাইগুড়িতে। বৃহস্পতিবার এসএফআই-টিএমসিপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হল জলপাইগুড়ি। এসএফআই দফতরে ঢোকার চেষ্টা টিএমসিপির। সিপিএমের জেলা দফতরের মধ্যেই রয়েছে এসএফআইয়ের জেলা দফতর। সিপিএম পার্টি অফিসের সামনেই সংঘর্ষ, ইটবৃষ্টি, ২পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের রাজ্য সভাপতির উপরে হামলার অভিযোগ টিএমসিপির। সেই ইস্যুতে হওয়া প্রতিবাদ মিছিল থেকে টিএমসিপির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ। 


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাগিং এর ফলে মৃত্যু হওয়া স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুর প্রতিবাদে ঠিকমতো তদন্তের দাবিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হস্টেলে CCTV এর ব্যবস্থা করদাবি জানিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই দাবিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস্ এর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা। ছিলেন রাজ্য সভাপতি  তৃনাঙ্কুর ভট্টাচার্য। সেই সময় টিএমসিপির সকলে বহিরাগত এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম মনোভাবাপন্ন ছাত্র সংগঠনের পড়ুয়ারা। ডিএসও এবং এসএফআই-এর পড়ুয়াদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা। বাম সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই ঝামেলারাই আঁচ এসে পড়ে জলপাইগুড়িতেও। আজ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জলপাইগুড়ি থানা মোড় থেকে SFI-এর দলীয় অফিস পর্যন্ত মিছিল করে। এসএফআই পার্টি অফিস দখল করার ডাক দিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সংঘর্ষ সামলাতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে। 


র‍্যাগিংকাণ্ডে ফের গ্রেফতার: অন্যদিকে যাদবপুরের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ৩ পড়ুয়া ছাড়াও রয়েছেন ৩ জন প্রাক্তনী। এই নিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯। এদের মধ্যে ৪ প্রাক্তনী ও ৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। যাদবপুর র‍্যাগিংকাণ্ডে ধৃত ৬ জনের ১২দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদে একই বয়ান দিচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। বয়ানের বাঁধা গৎ প্রাক্তনীদের শেখানো বুলি বলেই মনে করেছিলেন তদন্তকারীরা। এরপরই টানা জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও কয়েকজনের নাম। ঘটনার পরেই কয়েকজন তড়িঘড়ি হস্টেল ছাড়ায় সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও ৬ জনকে। 


উত্তেজনা প্রেসিডেন্সিতেও:
র‍্যাগিং বিরোধী প্রচারাভিযান ঘিরে এবার উত্তেজনা ছড়াল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে।  এসএফআইয়ের তরফ থেকে বুধবার ক্যাম্পাসে প্রচারাভিযান চালানোর সময় তৈরি হয় উত্তেজনা। এসএফআইয়ের অভিযোগ, পোস্টারিং করার সময় আইসি-র সমর্থকরা বেশ কিছু প্রাক্তনীদের সঙ্গে নিয়ে এসে পোস্টার ছিড়ে দেয়। কালি লেপে দেওয়া হয় পোস্টারে। হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয় ২ ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে আইসি-র তরফে। 


আরও পড়ুন: 'র‍্যাগিং বন্ধ নিয়ে রাঘবন কমিটির সুপারিশ কার্যকর হলে ছেলেটা বেঁচে যেত', আক্ষেপ সন্তানহারা বাবার