কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র অধ্যাপক স্বপনকুমার ভট্টাচার্যকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল। রসায়নের বিভাগীয় প্রধান স্বপনবাবুকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির নেতা। অধ্যাপককে গালিগালাজ, এমনকি শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেন বাকি অধ্যাপকরাও। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজবনক ঘটনা, আলোচনা সাপেক্ষে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার। 

এই ঘটনায় ফের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েক। বুধবার দুপুরে একযোগে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জমা দেন অধ্যাপকরা। তাঁদের অভিযোগ, রসায়ন বিভাগের প্রধানকে গালিগালাজের পাশাপাশি শারীরিক ভাবেও হেনস্থা করা হয়েছে। দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাল বার বলা সত্ত্বেও খোলা হয়নি। সিনিয়র ওই অধ্যাপককে চূড়ান্ত অপমান করা হয়। তার পরই এ দিন ক্লারুম থেকে বেরিয়ে সব অধ্যাপকরা অরবিন্দ ভবনের সামনে হাজির হন। অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে, দাবি জানান তাঁরা। তা হওয়া না পর্যন্ত উঠবেন না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। 

আক্রান্ত অধ্যাপক বলেন, "আক্রান্ত আমি প্রচুর অপমানিত হয়েছি আজ। শুধু ঘর খুলতে বলেছিলাম। কিন্তু উনি জানিয়ে দেন, ঘর খুলবেন না। বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসে। বাজে ভাষায় আমাকে আক্রমণ করে। হাজিরার খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। বেশি কিছু বলতে চাই না। রেজিস্ট্রার, উপাচার্যের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে, চাই না এ নিয়ে বেশি ঝামেলা হোক। আমার বিশ্বাস কর্তৃপক্ষ ব্য়বস্থা নেবেন।"

এ নিয়ে জুটার সাধারণ সম্পাদক জানান, ওই শিক্ষাকর্মী দিনের পর দিন ক্লাসরুমের দরজা খুলছে বন্ধ করে রেখেছেন। তা না খোলায়, ক্লাস করা যাচ্ছে না। বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব তাঁকে দিয়ে সেটি করানো। কিন্তু তিনি দরজা খুলতে অস্বীকার করেন। এর পর বিভাগীয় প্রধান নিজে গিয়ে ঘর খোলেন। হাজিরার খাতায় সই করতে গেলে, তাও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। চলে গালিগালাজ। হামলাষ।  কোন বাবা বাঁচায় দেখে নেবেন, এমন কথা বলেও শিক্ষাকর্মী হুমকি দেন বলে দাবি জুটা-র। তবে জুটা জানিয়েছে, শিক্ষকদের উপর হামলা চালিয়ে, ভয় দেখিয়ে কিছু করা যাবে না। শিক্ষা এবং পড়ুয়াদের স্বার্থে যা করণীয়স, তা করবে সংগঠন। 

যদিও বিনয় সিং নামের অভিযুক্ত শিক্ষাকর্মী অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, "সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানানো কথা। এই অভিযোগের সঙ্গে সত্যের কোনও মিল নেই।  সত্যিই যদি এমন হয়ে থাকে, উপযুক্ত জায়গায় অভিযোগ জানান। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।"

এ ভাবে হেনস্থা করার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এখানে সবাই মিলেমিশে থাকেন। অশিক্ষক শিক্ষক মিলেমিশএ থাকেনন। কেন ঘটল দেখব হয়ত ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুঃখপ্রকাশ করছি। দেখব যাতে এমন না ঘটে আগামী দিনে।" আর সেই নিয়ে এ দিন পরিস্থিতি ক্রমশ তেতে উঠতে থাকে। 

এ দিনের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে, গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দেন রেজিস্ট্রার। তিনি বলেন," এ ভাবে হেনস্থা করার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এখানে  শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, সকলে মিলেমিশে থাকেন। কেন এমন ঘটনা ঘটল, খতিয়ে দেখব আমরা। হয়ত ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে কোনও ভাবে। আমি দুঃখপ্রকাশ করছি। দেখব যাতে এমন না ঘটে আগামী দিনে।"