ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, সুজিত মণ্ডল, কলকাতা : অনেক স্বপ্ন নিয়ে, ছেলেকে দেশের অন্য়তম সেরা বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ( Jadavpur University ) পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই ক্য়াম্পাসই কেড়ে নিল স্বপ্নদীপকে! সন্তানের মৃতদেহ দেখার যন্ত্রণা ঠিক কতটা, তা বলে দিচ্ছে এই মা-বাবার বুক ফাটা কান্না! স্বপ্নদীপের বাবার বুকফাটা কান্না, স্বপ্নদীপ তো আর ফিরবে না, কিন্তু ওর দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক !
তদন্তে নেমে, শুক্রবারই সৌরভ চৌধুরী নামে যাদবপুরের এক প্রাক্তন ছাত্রকে ( Sourabh Chowdhury ) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছেলের মৃত্য়ুর পর এই সৌরভ চৌধুরীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে নিহত স্বপ্নদীপের পরিবারও।
কী করতে সৌরভ ? স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু বলছেন, হয়ত রাজনৈতিকভাবে তাঁকে অপদস্থ করার প্রবণতা ছিল। স্বপ্নদীপকে চুল ছোট করে কেটে ফেলতে বলা হয়েছিল। এ বলেছিল, দাদাভাই, আমি তো জন্মদিনে কোনওদিন চুল কাটিনি ... সোমবার ওর জন্মদিন। তাই ও অনুরোধ করেছিল।
পুলিশ সূত্রে দাবি, মৃত ছাত্রের বাবা যে FIR করেছেন, তাতে এই সৌরভ চৌধুরীর নাম রয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সৌরভ চৌধুরীর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভ চৌধুরী যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০২২ সালে তিনি MSc পাস করেন। কিন্তু, পাস করে যাওয়া পরও, গত একবছর ধরে তিনি হস্টেলেই থাকতেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নিয়ম, কোনও পড়ুয়া অপর পড়ুয়ার গেস্ট হিসেবে হস্টেলে থাকতে পারে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে দাবি, এই সৌরভ চৌধুরী পাস করে যাওয়ার পরও নিজেই নিজের গেস্ট হিসেবে হস্টেলে থাকতেন! এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সৌরভ চৌধুরী কি এতটাই প্রভাবশালী? পাস করে যাওয়ার পরও একবছর ধরে সৌরভ চৌধুরী হস্টেলে থাকছিলেন কীভাবে?
স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগ, 'সব কথাই হত ওই সৌরভের সঙ্গে। ওই ওইখানকার পাণ্ডা'
এটা কর্তৃপক্ষের নজরেই আসেনি, নাকি তাদের প্রচ্ছন্ন মদতেই এমনটা সম্ভব হয়েছে? আজ স্বপ্নদীপের এই মর্মান্তিক পরিণতির দায় কি বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে?
শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়, হস্টেল সুপার তপন জানা, বাংলার বিভাগীয় প্রধান জয়দীপ ঘোষ এবং কার্যকরী উপাচার্য সুবিনয় চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এছাড়া স্বপ্নদীপের ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ বাংলা বিভাগের ৫ পড়ুয়াকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আরও পড়ুন :