ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : যাদবপুরে ( Jadavpur University ) পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর জন্য কি দায়ী র্যাগিং? এই পড়ুয়া মৃত্যুর দায় কি এড়াতে পারে কর্তৃপক্ষ? সাজা হবে কি রহস্যমৃত্যুকাণ্ডে অভিযুক্তদের? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুকাণ্ডে খুনের মামলা রুজু করল পুলিশ।
স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগ কী কী
মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতেই এই খুনের মামলা রুজু করা হয়। শুধু খুনের ধারা নয়, এর সঙ্গে সম্মিলিত অপরাধের ধারাও যোগ করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, এক নয়, মৃত্যুর পিছনে থাকতে পারে একাধিক জনের যোগ রয়েছে। মৃত স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাবার অভিযোগ, হস্টেলের এক আবাসিক তাঁর ছেলেকে উত্যক্ত করত।
আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদে কী তথ্য উঠে এল ?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রাতেই হস্টেলের ১০-১৫ জন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জয়েন্ট সিপি ক্রাইম জানিয়েছেন, প্রত্য়ক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগপত্রের জন্য় ছাত্রের বাড়িতে পাঠানো হয় পুলিশের প্রতিনিধি দল। অন্য়দিকে, DC SSD জানিয়েছেন, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তদন্তে সহযোগিতা করছেন আবাসিকরা।
পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার রাতে মাকে শেষবার ফোন করেছিলেন স্বপ্নদীপ। জানিয়েছিলেন, তিনি ভাল নেই। খুব ভয় করছে। পরিবারের দাবি, মাকে তাড়াতাড়ি আসতেও বলেছিলেন। আর বাবাকে বলেছিলেন, প্রচণ্ড চাপে থাকার কথা! স্বপ্নদীপের বাবা জানিয়েছেন, 'ছেলে বলেছিল, বাবা প্রচণ্ড চাপে আছি, প্রচণ্ড চাপ, বাবা তুমি এসো, মা তুমি এসো, আমাকে বাঁচাও। আমি ভয়ের মধ্যে আছি, তার কিছুদিন পরেই এই ঘটনা।'
স্বপ্নদীপ ছাত্র ছিলেন বিজ্ঞানের, কিন্তু বাংলা পড়তে ভীষণ ভালবাসতেন। বাবা সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী। মা গৃহবধূ। ভাই নবম শ্রেণির ছাত্র। পরিবার সূত্রে খবর, ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন স্বপ্নদীপ। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে মাত্র ২ নম্বর কম পাওয়ায় কলেজে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে পারেননি। বাংলা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাড়ির কাছের বগুলা কলেজে। তারপর যখন জানতে পারলেন, যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, তখন আর আনন্দের সীমা ছিল না । পরিবার সূত্রে খবর, গত ৩ তারিখ যাদবপুরে স্বপ্নদীপকে বাংলা অনার্সে ভর্তি করেন বাবা। হস্টেল না মেলায় রবিবার রেখে আসেন হস্টেলের সিনিয়র দাদাদের কাছে। স্বপ্ন সফল করতে এসেই এই পরিণতি হল তাঁর।
সহপাঠীদের দাবি, বুধবারই নিজের ফেসবুক প্রোফাই ডিঅ্যাক্টিভ করে দেন ওই পড়ুয়া। মৃত্যুর সঙ্গে এর কোনও যোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে যাদবপুর থানার পুলিশ।