কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার প্রাক্তন পড়ুয়া। মৃত স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রথমে তাকে আটক করা হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই প্রাক্তন ছাত্রের নাম সৌরভ চৌধুরী। পুলিশ সূত্রে খবর, বয়ানে বেশকিছু অসঙ্গতি মেলায় আটক করা হয় প্রথমে। পরে গ্রেফতার করা হয় ওই প্রাক্তন ছাত্রকে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, মৃত ছাত্রের বাবা যে FIR করেছেন, তাতে এই সৌরভ চৌধুরীর নাম রয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সৌরভ চৌধুরীর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভ চৌধুরী যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০২২ সালে তিনি MSc পাস করেন।কিন্তু, পাস করে যাওয়া পরও, গত একবছর ধরে তিনি হস্টেলেই থাকতেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নিয়ম, কোনও পড়ুয়া অপর পড়ুয়ার গেস্ট হিসেবে হস্টেলে থাকতে পারে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে দাবি, এই সৌরভ চৌধুরী পাস করে যাওয়ার পরও নিজেই নিজের গেস্ট হিসেবে হস্টেলে থাকতেন। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সৌরভ চৌধুরী কি এতটাই প্রভাবশালী? পাস করে যাওয়ার পরও একবছর ধরে সৌরভ চৌধুরী হস্টেলে থাকছিলেন কীভাবে? এ টা কর্তৃপক্ষের নজরেই আসেনি, নাকি তাদের প্রচ্ছন্ন মদতেই এমনটা সম্ভব হয়েছে? আজ স্বপ্নদীপের এই মর্মান্তিক পরিণতির দায় কি বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
এদিন স্বপ্নদীপের বাবা বলেন, " ঠিক ছিল শুক্রবারে গিয়ে নিয়ে আসব। তেমনটাই কথা হয়েছিল। বলেছিল সব কিছু বলা নিষেধ। অ্যাডজাস্ট করে থাকতে হচ্ছে। ওইদিন রাতে বারবার ফোন করে দেখি ফোন কেটে দিচ্ছে। র্যাগিং চক্রের মধ্যে যারা ছিল তারাই কেটে দিয়েছে ফোন। তাদের ফোন থেকেই ফোন করে কথা বলে। ওরা শিখিয়ে দিচ্ছিল এটা বল ওটা বল। বারবার বলছিল মা ভাল নেই। অনেক কথা আছে। ওর দাদা বারবার জিজ্ঞেস করছিল ভাই ভাল আছিস তো? বোঝা যাচ্ছিল ওকে কেউ চেপে ধরে রেখেছে। এই ছেলে বেরিয়ে গেলে ফাঁস হয়ে এটা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল। যার জন্য ওকে শেষ করে দেয়। ও বোধহয় ভাবতে পারেনি শেষ করে দেবে। মাথার চুল কেটে ছোট করে দেয়। সৌরভ সিনিয়র স্টুডেন্ট। ওই মূল পান্ডা। ওরাই মেরে ফেলেছে। আমরা যাওয়ার সময় সৌরভ আমাদের বলছে কাল সকালে আসবেন। স্বপ্নদীপ উপর থেকে পড়ে গিয়েছে। এই খুনিদের নির্মূল হোক। কেপিসির ডাক্তার জানে কত জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। গ্রাম থেকে এত কষ্ট করে পাঠালাম। পিজি চালাতে পারব না। সৌরভ বলল আমি রেখে দেব ঠিক হস্টেলে। ওই মূল ষড়যন্ত্রী। অ্যান্টি র্যাগিং ফর্ম ফিল আপ করতে হয়। সেটা দেখেই ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।''
আরও পড়ুন: North 24 Parganas Weather: মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা, আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় উত্তর ২৪ পরগনায়