কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) প্রাক্তনী ও বহিরাগতদের হস্টেলে ঢুকতে না দেওয়ার নির্দেশ। প্রথম বর্ষের স্নাতকস্তরে যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিউ বয়েজ হস্টেলে স্থানান্তরিত হতে নির্দেশ দেওয়া হল ইতিমধ্যেই। ৭ অধ্যাপক, ১ চিকিৎসক, ৩ পড়ুয়া প্রতিনিধিকে নিয়ে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ল বিশ্ববিদ্যালয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) প্রথম বর্ষের ছাত্রর রহস্যমৃত্যুকাণ্ডে বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। এর পর যোগ করা হয়েছে সম্মিলিত অপরাধের ধারাও। চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর টনক নড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের। হস্টেলে প্রাক্তনী ও বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের করা হল অন্য হস্টেলে স্থানান্তর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রাতেই হস্টেলের ১০-১৫ জন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
জয়েন্ট সিপি ক্রাইম জানিয়েছেন, প্রত্য়ক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগপত্রের জন্য় ছাত্রের বাড়িতে পাঠানো হয় পুলিশের প্রতিনিধি দল। অন্য়দিকে, DC SSD জানিয়েছেন, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তদন্তে সহযোগিতা করছেন আবাসিকরা।
কেন ঘটছে এমন ঘটনা? পড়ুয়াদের মধ্যে র্যাগিং করার মানসিকাতা কেন তৈরি হচ্ছে? র্যাগিং রুখতে কী ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ডিন সহ অ্যান্টি র্যাগিং সেলের সদস্যদের নিয়ে রাজভবনে জরুরি বৈঠকে জানতে চাইলেন আচার্য রাজ্যপাল। বৈঠকে ছিলেন ছিলেন ২ জন মনোবিদও।
বাড়ি ফেরার কথা ছিল আজই! হস্টেল থেকে আজই বগুলার (Bogula) বাড়িতে আসার কথা ছিল স্বপ্নদীপের। সবাই অপেক্ষায় থাকলেও আর কোনও দিনই বাড়ি ফিরবেন না যাদবপুরের ওই পড়ুয়া। ছেলের ছোটবেলার ছবি আঁকড়ে ধরে কেঁদে চলেছেন মা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে এলাকায় মিছিল করেন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা।
ঠিক কী হয়েছিল? ১০ জুলাই মাঝরাতে হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রের। মৃতের নাম স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। তাঁর বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালির বগুলায়। র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলেন মৃত ছাত্রের আত্মীয়রা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ওরিয়েন্টেশন-সহ প্রথম তিনদিন ক্লাস করেছিলেন স্বপ্নদীপ। পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে পারছেন বলে খুশিও ছিলেন। কোনও সমস্যার কথা জানাননি। মেলেনি সুইসাইড নোটও। রাত পৌনে ১২টা নাগাদ ওই ছাত্র মেন হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। গুরুতর জখম অবস্থায় যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে গতকাল ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। সহপাঠীরা জানিয়েছিলেন, হস্টেলের আবাসিক ছিলেন না স্বপ্নদীপ। বন্ধুদের সঙ্গে থাকছিলেন। দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মৃত্যুর নেপথ্যে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে সন্দেহ মৃতের সহপাঠীদের। দেহে বাইরে থেকে আঘাত নাকি, পতনজনিত কারণে আঘাতের চিহ্ন, খতিয়ে দেখছে যাদবপুর থানার পুলিশ।