রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: শুরু হল মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হল না রাজগঞ্জের অর্জুন দাসের। বাইকে চড়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুনের। হাতি শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে (Madhyamik Student Killed)। তাতেই বেঘোরে মৃত্যু হয় ওই পড়ুয়ার (Elephant Attack)।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এ দিন শিলিগুড়ি (Siliguri) থেকে তিনি বলেন, "এর থেকে মর্মান্তিক ঘটনা কিছু হতে পারে না। যখন এরা দল বেঁধে আসে তখন এটা হয় না। তখন ফরেস্টের লোকেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যখন একা হয়ে যায়,মাথা ঠিক থাকে না। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়। কেউ তো জানত না এরকম ঘটনা ঘটবে। আমি আজকে শিক্ষা দফতরকে বলেছি প্রয়োজন হলে জঙ্গল এলাকায় যারা থাকে তাদের জন্য পরীক্ষার সময় বাসের বন্দোবস্ত করতে। কিন্তু হাতির দল বাসও উল্টে দিতে পারে। বন দফতরকে আর একটু সিরিয়াস এবং পুলিশকেও বলব নজর রাখতে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক এবং গৌতম দেবকে।''
পরীক্ষা দেওয়া হল না রাজগঞ্জের অর্জুন দাসের
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri News) পাঁচিরাম নাহাটা স্কুলের ছাত্র অর্জুন দাস। বেলাকোবার কেবলপাড়া হাইস্কুলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে জঙ্গলের রাস্তায় হাতির হানার মুখে পড়ে। রাজগঞ্জের টাকিমারিতে হাতির হানায় জখম মৃত পরীক্ষার্থীর বাবা। মৃত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর (Madhyanik Candidate Body) দেহ আনা হচ্ছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Jalpaiguri Super Spaciality Hospital)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৯টা নাগাদ বাবার বাইকের পিছনে চেপে পরীক্ষা দিতে বেরিয়েছিল অর্জুন। কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে নিজে পৌঁছে দিচ্ছিলেন বাব। শর্টকার্ট নিতে ফরেস্ট রাস্তা ধরেন। সেই সময়ই কুয়াশার মধ্যে আচমকা সামনে চলে আসে একটি হাতি। প্রথমে অর্জুনের বাবা আহত হন। বাইক থেকে পড়ে যাওয়া অর্জুনকে এর পর শুঁড়ে পাকিয়ে আছাড় মারে হাতিটি।
চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। অর্জুনকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করে তাকে। অর্জুনের মৃত্যু হলেও, কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছেন তার বাবা। তবে গুরুতর আহত তিনি। চিকিৎসা চলছে তাঁর।
আজ ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু, ঝুঁকি এড়াতে শর্টকার্ট নিয়েছিলেন বাবা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু। বিকল্প রাস্তা ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হলে সেই রাস্তা ধরা হলে, ১৫ কিলোমিটার পথ পেরোতে হতো। তাই ঝুঁকি নিতে চাননি অর্জুনের বাবা। কিন্তু তাতেই মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে যায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।। তবে বন দফতরের তরফে ওই পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সবরকম ভাবে সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।