জলপাইগুড়ি: প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠলেও, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি এখনও পর্যন্ত। ধ্বংসের চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে চারিদিকে। সেই অবস্থায় বেনজির ঘটনা জলপাইগুড়ি। বন্যার জলে ভেসে এসে, খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ল একটি অজগর। আর সেই অজগরের সঙ্গে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে গেল সকলের মধ্যে। (Python in Jalpaiguri)

Continues below advertisement

জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের ডাঙ্গাপাড়ার ঘটনা। অতিভারী বৃষ্টি এবং বন্যায় কার্যতই জলের তলায় চলে গিয়েছিল গোটা এলাকা। রাস্তা কোনটি, আর পুকুর কোনটি বোঝা যাচ্ছিল না যেমন, তেমনই স্থানীয় বাড়িগুলিতে পর্যন্ত জল ঢুকে পড়েছিল। জল নেমে গেলেও এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। (Jalpaiguri News)

আর সেই আবহেই এলাকায় ১২ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ ধরা পড়ল। বন্যার জলে ভেসে সেটি ভেসে এসেছিল এবং খাবারের খোঁজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিবার এলাকার পুকুর থেকে জল তুলছিলেন কয়েকজন যুবক। কচুরিপানা তুলতে গিয়ে দেখেন, তার নীচে প্রকাণ্ড অজগরটি ঘাপটি মেরে রয়েছে। 

Continues below advertisement

অত লম্বা অজগর দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই যুবকরা। সব ফেলে ছুটে উঠে আসেন পুকুর থেকে। মুখে মুখে বিষয়টি চাউর হতে সময় লাগেনি। এর পর সাহসে ভর করে এগিয়ে আসেন কয়েক জন যুবক। অজগরটিকে পুকুর থেকে ডাঙায় তুলে আনেন তাঁরা। স্থানীয়দের তরফে এর পর বন দফতরে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছতে সময় নেন বন দফতরের কর্মীরা।

এতে স্থানীয়রাই অজগরটিকে মোরাঘাট রেঞ্জের খট্টিমারি বিট অফিসে নিয়ে যান। কিন্তু অজগরটিকে ঘিরে রীতিমতো জটলা বেঁধে যায়। সেটিকে গলায় পেঁচিয়ে সেলফি তুলতে এগিয়ে আসেন দলে দলে মানুষ। বন্যপ্রাণ আইনের ১ নম্বর তফসিলের আওতায় পড়ে অজগর। সেটিকে নিয়ে এহেন আচরণে দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দরুণ এখনও লন্ডভন্ড উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লোকালয়, পর্যটন কেন্দ্রগুলি। সেই আবহে এদিন ফের উত্তরবঙ্গ শহরে রওনা দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ নিয়ে রিভিউ মিটিং রয়েছে। শুক্রবার কলকাতায় ফিরবেন তিনি। উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় সামাল দিতে যাঁরা ভাল কাজ করেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানিয়েছেন। মমতা জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গে ৩ লক্ষ ১৭ হাজার ক্যাম্পের লক্ষ্য়মাত্রা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত হয়েছে ২৮ হাজাপ ৩০০টি। বিপর্যয়ে যাঁদের নথিপত্র হারিয়ে গিয়েছে, তা করে দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।