রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প শুরু হতেই নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসছে এই প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির ছবি। উত্তরবঙ্গের আমবাড়ি, ফালাকাটার পর আবার ফের রাজগঞ্জ সুখানী অঞ্চলের দুয়ারে সরকারের কর্মসূচি চলাকালীন গার্লস স্কুলের ক্যাম্পাসের মধ্যেই টাকার বিনিময়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ফিলাপের অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মহিলাকে।
ঠিক কী অভিযোগ?
পুলিশ সূত্রে খবর, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ফিলাপের জন্য ওই মহিলা কারো কাছে ৩০ টাকা, আবার কারোর থেকে ৪০ টাকা করে নিচ্ছিলেন বলেই অভিযোগ আসে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম বিলি, পূরণ সমস্ত কাজই বিনামূল্যে হবে এমন প্রতিশ্রুতিই দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী ও কিছু মানুষ সেটা জানতে পেরে হাতেনাতে সেই মহিলাকে ধরে। এরপর রাজগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে, একই ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়িতেও। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প‘ -এর ফর্ম পূরণ করার জন্য় টাকা নেওয়ার সময় শিলিগুড়িতে হাতেনাতে পাকড়াও এক যুবক। ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় অভিযুক্ত যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প’-এর ফর্মের জন্য সকাল থেকেই এখানে লাইন দেন কয়েক হাজার মহিলা। সেখানেই রীতিমতো ক্যাম্প করে ফর্ম পূরণ করছিলেন এক যুবক। ফর্ম পূরণের বিনিময়ে টাকা নিচ্ছিলেন তিনি। ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে হাতেনাতে এই যুবককে পাকড়াও করা হয়।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছে রাজ্যের একাধিক এলাকায়। মালদায় ভিড়ের চাপে হয়ে আহত হলেন কয়েকজন মহিলা। অন্যদিকে, দুর্গাপুরেও ফর্ম তুলতে মানুষের ঠেলাঠেলি। এই অবস্থায় কাউকে অযথা ভিড় না করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নবান্ন সূত্রে খবর, এখন পরিবারের একাধিক মহিলাকে প্রকল্পের আওতায় আনার ফলে বছরে বাজেট গিয়ে দাঁড়াতে পারে ১৭ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এত টাকার জোগান হবে কী ভাবে, এখন সেই চিন্তা অর্থ দফতরের আধিকারিকদের।