রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জমি ফেরত দিতে হবে, না হলে দিতে হবে চাকরি। এই দাবিতে ফের বিক্ষোভ দেখালেন জমিদাতারা। আর এই আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জলপাইগুড়ি।
দাবি আদায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে, পৌঁছে গেলেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের অফিসের সামনে। লাঙল হাতে নিয়ে জমিদাতাদের বিক্ষোভ ঘিরে মঙ্গলবার এভাবেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেলাশাসক অফিস চত্বর।
জেলাশাসকের অফিসে জোর করে আন্দোলনকারীরা ঢুকতে গেলে, শুরু হয় ধস্তাধস্তি। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রকৃত জমিদাতাদের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ির এই জমি বিতর্কের শুরুটা হয় বাম আমলে। দাবি, ১৯৮৫ থেকে ২০০৯-- বাম আমলের এই সময়ে তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ সহ অন্যান্য প্রকল্পের জন্য সরকার প্রচুর জমি অধিগ্রহণ করেছিল।
আন্দোলনকারীদের দাবি, নামমাত্র টাকায় সেসময়ে জমি নেওয়া হয়। সেসময়েই বলা হয়েছিল, জমিহারাদের পরিবারের একজন করে সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। জমি অধিগ্রহণের কয়েক দশক পেরিয়ে গেলেও অনেকের পরিবারেরই কেউ চাকরি পায়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজগঞ্জ, ক্রান্তি, জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং ফুলবাড়ি ব্লকের প্রায় ৬০০ জন কৃষক রাজ্য সরকারকে জমি দেন। জমিদাতাদের দাবি, তিন দশক পেরিয়ে গেলেও ৫০০ জন চাকরি পাননি।
চাকরির দাবিতে বছর দুয়েক আগে, এই জেলাশাসক ভবনের কাছে অনশনে বসেন তাঁরা। জানান, ২০১৯ সালে দীর্ঘদিন ধরে অনশন আন্দোলন করেছিলেন। সেই সময় তৃণমূল নেতা ও বিধায়করা এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা আন্দোলন তুলে নিয়েছিলেন।
জলপাইগুড়ি জেলা ল্যান্ড লুজার কমিটির দাবি, কিন্তু দু’বছর সময় পার হয়ে গেলেও তাঁরা চাকরি পাননি। তাই আজ তাঁরা জেলাশাসকের দারস্থ হয়েছেন। প্রশাসন কথা না রাখায় ফের তাঁরা পথে নেমেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা জমি দিয়েছেন কি না জানতে নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথি। ৫ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে চাকরির দাবিতে পথে নামলেন জমিদাতারা।