নয়াদিল্লি: “মনে করব, এটা একটা দুঃস্বপ্ন। একদিন আমরা ঠিক জেগে উঠব। কিন্তু আমি জানি, এটা সত্যি নয়, আমরা মরতে চলেছি।’’ মৃত্যুর আগে এটাই ছিল আফগান (Afghanistan) ইউটিউবার নাজমা সাদেকির (Najma Sadeqi) শেষ ভিডিও বার্তা। কাবুল (Kabul) বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে নিহত হন ২০ বছরের তরুণী। শেষ ইউটিউব ভিডিও-তে জার্নালিজমের ছাত্রী নাজমার আক্ষেপ, কাবুলে যারা স্বাধীনভাবে, শান্তিতে থাকতে চায়, তাদের কাছে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি আফগান ইনসাইডার ইউটিউবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন নাজমা সাদেকি। কিছুদিনের মধ্যেই ২ কোটি ৪০ লক্ষে পৌঁছয় তাঁর ভিউয়ারের সংখ্যা।


কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের পরই সোশাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিও। ওই ভিডিও বার্তা তরুণী বলেন, “আমদের বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। এটাই শেষ ভিডিও।’’ একইসঙ্গে ওই ভিডিও-তে সবাইকে বিদায়ও জানান তিনি। ওই ভিডিওতে সাদেকি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত খরচ সহ শিক্ষার ব্যয়ভার আমি নিজেই বহন করি। আর সেই জায়গায় বর্তমানে অনেক পরিবার খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে।’’


আরও পড়ুন: কাবুল বিমানবন্দরে অকেজো রাডার, অনিশ্চিত আটক ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া


এদিকে, ফের একবার সামনে এল তালিবান শাসনে অত্যাচারের ছবি। রাস্তা দিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন এক মহিলা পুলিশ অফিসার। তাঁকে ধাওয়া করেছে কয়েকজন তালিবান। তাদের হাতে অস্ত্র, কেউ কেউ ছুড়ছে পাথর। গুলাফরোজ এবতেকার নামে বছর চৌত্রিশের ওই মহিলা আফগানিস্তান পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ডেপুটি। আফগানিস্তান পুলিশ অ্যাকাডেমির প্রথম মহিলা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। সেই গুলাফরোজই তাঁর বন্ধু ও আত্মীয়দের নিয়ে মার্কিন সেনাদের সাহায্যে দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন। তখনই কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের গেটে ওই মহিলা পুলিশ অফিসারের তালিবান হামলা চালায়, তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। 


অন্যদিকে, কাবুল বিমানবন্দরে রাডার অকেজো থাকায় আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল আফগানিস্তানে আটক ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া। সূত্রের খবর, কাবুল ছাড়ার আগে মার্কিন সেনা বহু বিমান ও সামরিক সরঞ্জাম অকেজো করে দিয়ে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রাডার সিস্টেম। বিমান ওঠানামা পুরোপুরি বন্ধ। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাডার কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। রাডার চালু না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বাণিজ্যিক উড়ান চলাচল।