সনৎ ঝা, নাগরাকাটা : ত্রাণ দিতে গিয়ে প্রকাশ্যে হামলার ঘটনায় এখনও গ্রেফতারি শূন্য। নাগরাকাটায় আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্যামেরাবন্দি হয়ে আছে হামলাকারীরা। নির্দিষ্ট করে ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তাও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের সামনেই বেনজির এই গুন্ডামির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে ফেসবুক পোস্টে চার জনের ছবি দিয়ে নাম উল্লেখ করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, তৃণমূলের সেই এক 'সন্ত্রাসবাদ মডেল'। নাগরাকাটার মানুষের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই, কী করে জানবে যে কে তৃণমূল? পাল্টা প্রশ্ন করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। পাথরের আঘাতে জখম হয়েছেন তিনি। আক্রান্ত হন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে, ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, তৃণমূলের সেই এক 'সন্ত্রাসবাদ মডেল', দেখুন কাদের ব্যবহার করা হয় আজকের নাগরাকাটায় সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষদের ওপর এই নির্মম প্রাণঘাতী আক্রমণ ঘটাতে।
ফেসবুক পোস্টে চার জনের ছবি দিয়ে নাম উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি...এই চারজন হলেন সইফুল হক, আইনুল আনসারি, রমজান আলি এবং পিঙ্কি খাতুন। এরপর ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী আরও লিখেছেন, ঠিক যেই সব দুর্বৃত্তদের এনেছিল কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে আমার ওপর আক্রমণ করতে, সেই ভাবেই এখানেও একই ভাবে সেই 'বিশেষ সম্প্রদায়ের' কিছু উচ্ছৃঙ্খল আইন অমান্যকারীদের পরিকল্পিত ভাবে জড়ো করা হয় এই ঘৃণ্য অপরাধ-অরাজকতা ঘটাতে। এরপর তিনি আরও লেখেন, এরা নিজেরাই আতঙ্কিত যে মমতা সরকার চলে গেলে এদের বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যাবে, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কিত যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে এদের খোলা ছাড় দিতে হবে, নয় তো এরাই কোনও দিন ঘটী উল্টে দেবে। এরা একে অপরের পরিপূরক তাই রাজ্যে আইনের শাসন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "এই রাজ্যে কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, কোনও আইন-শৃঙ্খলা বলে কোনও কিছু অবশিষ্ট নেই। এই সরকার কার্যত একটা লুটেরাদের সরকার হয়ে গেছে।"
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, "যাঁরা ২ জন এখানে এসেছিলেন, একজন হচ্ছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক, আর একজন হচ্ছেন মালদার MP, এঁরা নাগরাকাটার মানুষকে চেনার কোনও প্রশ্ন নেই, এঁরা তো নাগরাকাটার মানুষের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। এটা কী করে জানবে যে কে তৃণমূল, কে বিজেপি, কে সিপিএম, কে অন্য রাজনৈতিক দল করে ?"
সব মিলিয়ে নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি।